Image description

রাজশাহীতে লক্ষ্যমাত্রা থেকে অধিক পরিমাণ আম উৎপন্ন হওয়ার কারণে ক্রেতা সংকটে রাজশাহীর আম চাষী এবং আমের ব্যবসায়ীরাও দুর্ভোগে পড়েছে। নির্ধারিত সময় থেকে আম পাড়া শুরু হলেও অধিকাংশ আম চাষি এবং আমের ব্যবসায়ীরা আম পেড়ে শেষ করতে পারেনি। বিশেষ করে রাজশাহীতে অতিরিক্ত গরম এবং বৃষ্টির কারণে আম চাষিরা আরো বিপাকে পড়ছে কারণ আম পেকে ঝরে যাচ্ছে। এ অবস্থায় কৃষকেরা আম বাজারে নিয়ে আসলেও বাজারের সঠিক মূল্য পাচ্ছে না।

শুক্রবার (২৭ জুন) উত্তরবঙ্গের আমের সবচেয়ে বড় বাজার বানেশ্বরে আম চাষী এবং আমের ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বললে এমন চিত্র উঠে আসে।

তাছাড়া সরকারি নির্দেশ অমান্য করে আড়ৎদারগণ সরকার কর্তৃক ওজন ৪০ কেজিতে মণ নেয়ার কথা থাকলেও আড়ৎদার কৃষকদের কাছ থেকে ঢলন প্রথা হিসেবে দুই কেজি কাটাই বাদ, দুই কেজি সোলা হিসেবে বাদ দিয়ে মোট ৪৬ কেজিতে মণ হিসাবে ক্রয় করছে। এই কারণে আম চাষিরা আরও বেশি হতাশাগ্রস্থ হচ্ছে।

বানেশ্বর বাজারে দেথা যায়, বর্তমানে লক্ষণভোগ আমের দর যাচ্ছে মাত্র ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা মণ, ফজলি আমের দাম যাচ্ছে মাত্র ৫০০ টাকা মণ, কালুয়া আমের দাম যাচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা মণ। তাছাড়া সাধারণ ব্যবসায়ীরা আম ক্রয় করছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা ক্যারেট কোন ওজন ছাড়াই। এদিকে আম্রপালি আমের রকম ভেদে ১২০০ থেকে ২৫০০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে। শেষের দিকে বর্তমানে আমের রাজা ল্যাংড়া পনেরশো টাকা থেকে ২৫০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।

আম চাষি জনি জানান, কোন আড়ৎতেই ৪০ কেজিতে মণ হয় না। আম বাজারজাত কম হচ্ছে তাই আমরা বেশি কিছু কথা বলতে পারছি না।

এবিষয়ে আমের আড়ৎদার শামীম আহমেদ জানান, কোন কৃষক বা ব্যবসায়ী আমাদের এ বিষয়ে প্রশ্ন করে না। তাই আমরাও এই ভাবে নিয়ে থাকি। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।

কীটনাশক খরচ, লেবার খরচ ও জমির মূল্য হিসেবে আমচাষীদের এই দামে আম বিক্রি করে কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে মনে করছেন হান্নান নামের এক কৃষক। তিনি বলেন, আমি এক বিঘা জমি টেন্ডার দিচ্ছি ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা বছরে। আর আমের দাম পাচ্ছি ২০ থেকে ত্রিশ হাজার টাকা মাত্র। এখন মনে হচ্ছে আমের গাছ কেটে কৃষিজমি ফসল ফলানোই ভালো ছিলো। 

নাসিম নামে আরেক কৃষক বলেন, আমের বাগান কেটে অন্য কোন ফসল করব বলে মনে করছি।

আরিফ নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, এবার বাইরের বেপারী কম থাকায় আমের চাহিদা অনেক কম। তারপর অতিরিক্ত গরম এবং বৃষ্টির কারণে আম চাষিরা আরো বিপাকে পড়ছে। আম পেকে ঝরে যাচ্ছে।