
অবশেষে দীর্ঘ ১৭ বছরের শিরোপা খরা কাটাল টটেনহ্যাম হটস্পার। স্যান মামেস স্টেডিয়ামে ইউরোপা লিগের ফাইনালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ১-০ গোলে হারিয়ে নিজেদের ট্রফির খাতা ১৭ বছর পর খুললো লন্ডনের ক্লাবটি। ইউরোপা লিগের শিরোপা জিতে ইতিহাস গড়ল ‘স্পারস’রা।
বুধবার স্পেনের বিলবাও শহরের সান মামেস স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত উত্তেজনাপূর্ণ ফাইনালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ১-০ গোলে পরাজিত করে শিরোপা ঘরে তোলে টটেনহ্যাম। ইউরোপা লিগের চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগের টিকিট নিশ্চিত হয়েছে তাদের। ইউনাইটেডের হৃদয়ভাঙা বহুমূল্য একমাত্র গোলটি করেছেন ব্রেনান জনসন।
পারফরম্যান্সে টটেনহ্যাম ও ইউনাইটেডের এবারের প্রিমিয়ার লিগের যাত্রা ছিল লে যাওয়ার মতো। পয়েন্ট টেবিলে ইউনাইটেড ১৬ ও টটেনহ্যাম ১৭ নম্বরে রয়েছে। তাদের পরের তিনটি দলই রেলিগেশন জোনের। লিগের বাজে দুই দল হলেও ইউরোপা লিগের ফাইনালে উত্তাপও ছিল বেশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ম্যানইউকে হতাশ করে ট্রফি নিজেদের করে নিল টটেনহ্যাম।
বিলবাওয়ের মাঠে প্রথমার্ধের কিছু আগে জয়সূচক গোলটি পায় টটেনহ্যাম। পাপে মাতার সার-এর ডানদিক থেকে আসা একটি ক্রসে জনসন লুক শ’কে পরাস্ত করেন। বলটি দু’জন খেলোয়াড়ের গায়ে লেগে ধীরে ধীরে গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানার পাশ দিয়ে জালে জড়ায়। এটি ছিল কোনো বড় টুর্নামেন্টের ফাইনালে টটেনহ্যামের পক্ষে ২০০৮ সালের পর করা প্রথম গোল।
দ্বিতীয়ার্ধে গোল শোধের লক্ষ্যে মরিয়া চেষ্টা চালালেও ইউনাইটেড ছিল নিষ্প্রাণ। বারবার আক্রমণ করেও ভাঙতে পারেনি টটেনহ্যামের শক্ত রক্ষণভাগ। ৬৮ মিনিটে সবচেয়ে কাছাকাছি গিয়েছিলেন রাসমুস হøইলুন্ড। গোলরক্ষক ভিকারিও বল ফসকালে তার হালকা চিপ শটটি গোললাইন থেকে দুর্দান্তভাবে সেভ করেন ডিফেন্ডার মিকি ফন দ্য ফেন।
ম্যাচের শেষ সময়ে পেনাল্টির দাবি ওঠে লুক শ'য়ের ওপর পেদ্রো পোরোর একটি ট্যাকলের ঘটনায়, তবে রেফারি সেটি নাকচ করে দেন। অতিরিক্ত সময়ে শ’য়ের হেডার ঝাঁপিয়ে রক্ষা করেন ভিকারিও। শেষ পর্যন্ত ব্রেনান জনসনের একমাত্র গোলে জয় নিশ্চিত করে টটেনহ্যাম। এই জয় তাদের ইউরোপা লিগের ইতিহাসে তৃতীয় শিরোপা। এর আগে ১৯৭২ এবং ১৯৮৪ সালে এই প্রতিযোগিতা জিতেছিল ক্লাবটি।
এই জয়ে দুই মৌসুমের বিরতির পর চ্যাম্পিয়নস লিগে ফেরার পাশাপাশি আগামী আগস্টে উডিনেতে উয়েফা সুপার কাপ ফাইনালে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইন বা ইন্টার মিলানের মুখোমুখি হবে টটেনহ্যাম। ম্যাচ শেষে টটেনহ্যাম কোচ আঞ্জে পোস্তেকগলু বলেন, ‘আমি সবসময় আমার দ্বিতীয় মৌসুমে কিছু না কিছু জিতি। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আমি যা বলি, বিশ্বাস করেই বলি।’
অন্যদিকে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জন্য এটি আরেকটি হতাশাজনক রাত। এই হারে তারা ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়েছে এবং প্রিমিয়ার লিগে শেষ ম্যাচে হেরে গেলে টটেনহ্যামের নিচে নেমে যেতে পারে। দুই দলই এখন লিগে সর্বোচ্চ ১৪তম স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করতে পারবে।
Comments