
রাজবাড়ীর পাংশায় পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় রাশিদুল ইসলাম (৩৫) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। শনিবার (৩ মে) ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
নিহত রাশিদুল পাংশা উপজেলার পাট্টা গ্রামের কিয়ামদ্দিন মণ্ডলের ছেলে। তিনি পেশায় একজন কৃষক ছিলেন।
নিহতের ভগ্নিপতি ফজলুর রহমান জানান, আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে পাংশা উপজেলার পাট্টা ইউনিয়নের নিভা গ্রামে রাশিদুলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে প্রতিপক্ষের ২০-২৫ জন সদস্য। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
ফজলুর রহমান অভিযোগ করেন, দুই বছর আগে পাট্টা ইউনিয়নের নিভা গ্রামের সুদের কারবারি ইসলামের কাছ থেকে রাশিদুল সাত হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। দেড় বছর আগেই সুদসহ সেই টাকা ফেরত দেওয়া হলেও ইসলাম আরও টাকা দাবি করছিলেন। এই দাবির জেরে ইসলাম ও তার লোকজন রাশিদুলের পাট্টা বাজারের চায়ের দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এমনকি রাশিদুলের বাড়িতেও হামলা ও লুটপাট করা হয়। ভয়ে রাশিদুল তার পরিবার নিয়ে মাগুরার শ্রীপুরে ফজলুর রহমানের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
সাত মাস আগে রাশিদুল পরিবারসহ নিজ বাড়িতে ফিরে স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু করলেও ইসলাম ও তার লোকজন তাকে কয়েকবার হত্যার হুমকি দেয় বলে জানান ফজলুর রহমান।
তিনি আরও জানান, গত শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বরিশাল থেকে ধান কাটা শ্রমিকের কাজ করে বাড়ি ফেরেন রাশিদুল। শনিবার সকালে রুপিয়াট গ্রামে ধান ভাগ করতে যাওয়ার পথে নিভা গ্রামে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা ইসলাম, রফিক, খালিদ, সিন্টু, সুমন, সাদ্দাম ও ইকবালসহ ২০-২৫ জন তার পথরোধ করে। তারা রাশিদুলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায় এবং লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
ফজলুর রহমান আরও বলেন, ‘কুপিয়ে আমার শ্যালকের হাতের ও পায়ের রগ কেটে দিয়েছে। পিটিয়ে তার হাত-পা ভেঙে গুঁড়ো করে দিয়েছে। খুব নির্মমভাবে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এ ঘটনায় মামলা করব এবং হত্যার বিচার চাই।’
পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানান, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খালিদ নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তিনি বলেন, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Comments