বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ৩০০ পরিবারের মাঝে ঘর বিতরণ করলেন প্রধান উপদেষ্টা

২০২৪ সালের আগস্ট মাসে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বন্যার ভয়াবহতার চিত্র তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আমরা যখন দায়িত্ব নেই, তখন সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিলো এই বন্যা। তখন ঠিক বুঝতে পারছিলাম এটা সম্পূর্ণ ভিন্ন জায়গার বন্যা। যতই দিন যাচ্ছিল, বন্যা কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। বন্যায় ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত তিনশ পরিবারের কাছে ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধান উপদেষ্টার তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এসব ঘর বিতরণ করা হয়।
ঘরের চাবি বিতরণের সময় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন ড. মুহাম্মদ ইউনুস, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকারউজ্জামানসহ সংশ্লিষ্টরা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বন্যায় যারা বাড়িঘর হারিয়েছিল, তাদের কোথাও যাওয়ার কোনো জায়গা ছিল না। নানাভাবে প্রস্তাব আসছিল, বাড়ির জন্য টাকা দিতে হবে। টাকা দেওয়ার ব্যাপারে আমি একটু শক্ত অবস্থান নিয়েছিলাম। টাকা দিতে গেলে এই টাকার ভাগ-বাটোয়ারা অনেক রকম হয়ে যাবে। যারা প্রাপ্য তাদের হাতে পৌঁছাবে না। তখন প্রস্তাব এসেছিল যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে করার, সেই প্রকল্পের বিষয়ে জানা ছিল না, তবে নামটা জানা ছিল। তখন ভাবলাম যে এটা কী করা যায়, পরে জানলাম এটা সেনাবাহিনী করবে। তখন স্বস্তি পেলাম, আসলে টাকাটা সঠিকভাবে ব্যবহার হবে।
সেনাবাহিনীসহ সবার সহযোগীতায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে বন্যা কবলিতরা উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান, বেশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য গৃহনির্মাণ বরাদ্দ দেয়া অর্থের অর্ধেকে নির্মাণ কাজ শেষ করায় সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ভালো লাগছে যে, টাকাটার সঠিক ব্যবহার হয়েছে। ঘরটাও সঠিকভাবে নির্মাণ হয়েছে। অনেক সময় টাকা ব্যবহার করা হলেও গুণগতমান ঠিক হয় না। আজকে গুণগতমানের ব্যাপারেও আশ্বস্ত হলাম। আমরা যে টাকা দিয়েছিলাম তার অর্ধেক টাকাতে কাজটা হয়েছে। সাধারণত যে টাকা দেওয়া হয়, তার দ্বিগুণ চাওয়া হয়। এখানে যা দেওয়া আছে তার অর্ধেক ব্যবহার হয়েছে। একটা আনন্দের খবর।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই বাড়ি আপনাদের একটা অবলম্বন, মাথা গোঁজার জায়গা। এখানে আপনারা পরিবার পরিজন সন্তানদের নিয়ে বসবাস করবেন। যেহেতু ঘরের ব্যবস্থা হয়েছে, এখন আপনাদের সন্তানদের ভবিষ্যতের দিকেও নজর দিতে হবে। তাদের লেখাপড়া করাবেন, যাতে তারা ভবিষ্যতে ভালো নাগরিক এবং উদ্যোক্তা হতে পারে। দেশের মানুষ আপনাদের পাশে দাঁড়িয়ে যে সাহস জুগিয়েছে, সেটি মনের মধ্যে ধারণ করবেন। দেশের মানুষ আপনাদের সঙ্গেই থাকবে। এই সহমর্মিতা দেশের সব মানুষ প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লেই আমরা একটা সাহসী ও স্বনির্ভর জাতি হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো।’
Comments