জীবননগরে বোরো ধান কাটার ধুম, শ্রমিক সংকটে দুশ্চিন্তায় চাষিরা

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় পুরোদমে শুরু হয়েছে বোরো ধানকাটার মহোৎসব। বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটলেও, শ্রমিক সংকট তাদের কপালে ফেলেছে চিন্তার ভাঁজ। মাঠের প্রায় সব ধান একযোগে পেকে যাওয়ায় ধান কাটা ও মাড়াইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় শ্রমিক খুঁজে পেতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।
এদিকে, চাহিদা বাড়ায় ধান কাটার শ্রমিকরা তাদের মজুরি ১০০-২০০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছেন। অনেক শ্রমিক সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চুক্তিভিত্তিক কাজ করে প্রতিদিন ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা আয় করছেন।
উপজেলার উথলী, রায়পুর, আন্দুলবাড়ীয়া, হাসাদাহ, মনোহরপুর ও সিংনগর গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ আঁটি বাঁধছেন, আবার কেউবা মাথায় করে ধানের বোঝা নিয়ে যাচ্ছেন। সোনালি ধানে ভরে উঠেছে মাঠঘাট। তবে কৃষকরা বলছেন, শ্রমিক সংকটের কারণে ধান কাটা বিলম্বিত হচ্ছে।
মৃগমারী গ্রামের ধান চাষি তারিক হোসেন জানান, আড়াই বিঘা জমিতে ভালো ফলন হলেও শ্রমিক না পাওয়ায় সময়মতো ধান কাটতে পারেননি। মজুরিও বেড়েছে, ৪০০ টাকার স্থলে এখন ৫০০ টাকা দিতে হচ্ছে। বাধ্য হয়ে তিনি নিজেই ছেলের সঙ্গে মাঠে নেমেছেন।
সেনেরহুদা গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেও শ্রমিক পাওয়া কঠিন। তিন দিন পর শ্রমিক দেওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি। দ্রুত ধান ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন।
আরেক কৃষক মোমিন হোসেন জানান, দুই বিঘা জমিতে ভালো ফলন হয়েছে। তবে একই সময়ে ধান কাটা শুরু হওয়ায় শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে আগামী ১০ দিনের মধ্যে ধান ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এবার ৬ হাজার ২৬২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।
জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন জানান, ঝড় ও শিলাবৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় কৃষকদের দ্রুত ধান কাটার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ৮০ শতাংশ ধান পাকলেই কেটে ফেলার কথা বলা হয়েছে। শ্রমিক সংকটের বিষয়টি তারা অবগত এবং কৃষকদের সহযোগিতার চেষ্টা করছেন।
Comments