Image description

স্বচ্ছ, শুভ্র আকাশ। দিগন্তজুড়ে নীলের বিস্তার। আর সেই নীলের বুকে উড়ছে রংধনুর সাত রঙ মেশানো অজস্র ঘুড়ি। বাতাসের প্রতিটি ঢেউয়ের সঙ্গে যেন পাল্লা দিচ্ছে তারা, পত পত শব্দে মুখরিত আকাশ। নিচে, নদীর তীরে জেগে ওঠা চরে নাটাই হাতে দাঁড়িয়ে কিশোর, যুবক আর মধ্যবয়সী মানুষেরা। দৃষ্টি তাদের আকাশের দিকে স্থির, কার ঘুড়ি কত উঁচুতে উড়বে, চলছে নীরব প্রতিযোগিতা। সবার মনে একটাই আকাঙ্ক্ষা – ঐ দূর আকাশটাকে ছুঁয়ে দেওয়া।

পহেলা বৈশাখের পরদিন (২ বৈশাখ) বিকেলে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে সালটিয়া সেতুর পাশে এমনই এক মনোমুগ্ধকর চিত্র দেখা যায়। পড়ন্ত বিকেলে চরের ধূসরতা মুহূর্তে রঙিন হয়ে উঠল ‘ঘুড়ি উৎসব’-এর আমেজে। উত্তেজনা তখন তুঙ্গে, কারণ সময় যে বাঁধা – মাগরিবের আজান পর্যন্ত। আকাশ যত রাঙা হোক, ঐ ঐশ্বরিক ধ্বনি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই শেষ হবে লড়াই। তাই শেষ মুহূর্তের চেষ্টায় আকাশছোঁয়ার স্বপ্নে বিভোর সকলে উড়িয়ে চললেন হরেক রকমের বর্ণিল ঘুড়ি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এন.এম আবদুল্লাহ আল-মামুনের উদ্যোগে এবং সার্বিক সহযোগিতায় এই ব্যতিক্রমী ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করেন জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল আজিজ সাদেক। বাহারি রঙের ঘুড়ির এই উৎসব দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন সব বয়সের মানুষ। যেন এক টুকরো আনন্দ নেমে এসেছিল ব্রহ্মপুত্রের তীরে।

ঘুড়ি উৎসবে অংশ নেওয়া চরআলগী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি জাকির হোসেনের চোখে-মুখে ছিল অন্যরকম আনন্দ। দীর্ঘ বিরতির পর মুক্ত পরিবেশে ঘুড়ি উড়াতে পেরে তিনি উচ্ছ্বসিত। 

তিনি জানান, “পালিয়ে থাকা জীবন থেকে মুক্ত হওয়ার পর ফ্যাসিস্টমুক্ত পরিবেশে ঘুড়ি উৎসবে অংশ নিতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।” 

বিকেল বেলায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার এন.এম আবদুল্লাহ আল-মামুন আনুষ্ঠানিকভাবে এই আনন্দযজ্ঞের উদ্বোধন করেন। উৎসবের শেষ লগ্নে, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় তিনি নিজ হাতে তিন জন বিজয়ীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন। সেই আনন্দঘন মুহূর্তে উপস্থিত ছিলেন পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর কবির সাক্তার, সাবেক দফতর সম্পাদক আজহারুল হক, গফরগাঁও প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক রোবল মাহমুদ, সাংবাদিক ফারুকীসহ আরও অনেকে।