
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান আক্ষেপ করে বলেছেন, দেশের মানুষ ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৯০-এর ছাত্র আন্দোলন, এবং ২৪-এর জুলাই-আগস্টের আন্দোলনসহ বিভিন্ন সময়ে জীবন দিয়েছে—"আর কত জীবন দেবে এ দেশের মানুষ, আর কত লড়াই করবে?" শনিবার (৫ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ কতটুকু সুরক্ষা দেয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, মানুষ স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পেরিয়ে উন্নত হয়, তাদের ইতিবাচক পরিবর্তন হয়। কিন্তু আমরা যেন বারবার সাপ-লুডুর মতো অনেকদূর এগিয়ে গিয়ে আবার সাপে কেটে নিচে চলে আসি। তিনি বলেন, এতো জীবন দেওয়ার পর এখনও অসংগতি নিয়ে আলোচনা হওয়াটা গ্রহণযোগ্য নয়।
সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ নিয়ে তিনি বলেন, "যা যা পরিবর্তন করা প্রয়োজন ছিল, সেটা এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে অর্জিত হয়নি।" তার অভিযোগ, অতীতে যারা শাস্তি পেয়েছেন, তারা মুক্তি পেলেও "ঘুরেফিরে ওই একই বিধান আরেক জায়গায় রাখা হয়েছে, যাতে একই অভিযোগে গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেওয়া হবে।" তিনি এটিকে অযৌক্তিক উল্লেখ করে বলেন, আইনে অস্পষ্টতা থাকলে যারা আইন প্রয়োগ করে, তারা জনগণের ওপর নিপীড়ন চালায়। আইন প্রণেতাদের এই অস্পষ্টতা দূর করার দায়িত্ব রয়েছে বলেও তিনি মনে করেন।
নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, যারা আইনের অপব্যবহার করে জনগণের ওপর নিপীড়ন চালায়, তাদের শাস্তির বিধান ও জবাবদিহির বিধানও থাকা উচিত। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ঐকমত্য কমিশনে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হলেও এই সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ নিয়ে কেন আলোচনা নেই।
সেমিনারের সভাপতি নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না অধ্যাদেশের ৩৫ ধারার বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের বিধানের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, সরকার এটি সংকুচিত করার কথা বললেও, পুলিশ কোনো সীমাবদ্ধতা মানে না। মান্না জোর দিয়ে বলেন, "এই অধ্যাদেশ রাখা যাবে না।"
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের অর্থ সমন্বয়ক দিদারুল ভূঁইয়া, ভয়েস ফর রিফর্মের সহসমন্বয়ক ফাহিম মাশুরুর, এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ঢাকা মহানগর উত্তরের প্রধান সমন্বয়ক আকরাম হুসাইন। মূল বক্তব্য পাঠ করেন নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার।
Comments