Image description

গত তিন-চার দিনের টানা ভারী বর্ষণে কক্সবাজারের টেকনাফে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। এতে হ্নীলা, সদর ইউনিয়ন ও শাহপরীর দ্বীপের হাজারখানেক ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে, যার ফলে বহু মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। একইসঙ্গে, এই টানা বর্ষণে পাহাড় ধসের শঙ্কাও তীব্র হয়েছে, যা এড়াতে শনিবার থেকেই পাহাড়ি বসতি থেকে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) স্বেচ্ছাসেবকরা।

টেকনাফ পুরান পল্লানপাড়ার বাসিন্দা আমির হোসেনের ১২ সদস্যের পরিবার শনিবার সকাল থেকেই পানিবন্দি। চরম বিপদে পড়ে তিনি জানান, "বেশি ঝড়ের লাল্যাই গরত ঘুম যায় ন পারির। বিইন্না লটি কিছু হাইতো ন পারি। কিও হবর লইত নো আইয়ে। আঁর ঘরস একশ বাড়ি পানির নিছে ডুবি গিয়েও। বেশি হষ্ট অই পুয়াইন লই।" তিনি আরও জানান, প্রতিবছর বর্ষা হলেই তাদের এমন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

টেকনাফ দক্ষিণ বন বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ ২০টি পাহাড় ও ১১টি টিলায় প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ অবৈধভাবে বসবাস করছে, যাদের মধ্যে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকরাও (রোহিঙ্গা) রয়েছেন। এসব এলাকার মধ্যে ফকিরা মোরা, ধুমপেরাং ঘোনা, গিলাতলি, বৈদ্যরঘোনা, নতুন পল্লানপাড়া, পুরান পল্লানপাড়া, বরবইতলী, নাইট্যংপাড়াসহ আরও অনেক জনপদ রয়েছে। নাইট্যংপাড়ার বাসিন্দা দিল আহমেদ ভয়ে আছেন যে, এভাবে বৃষ্টি হতে থাকলে পাহাড় ধসে পড়তে পারে এবং তাদের যাওয়ার মতো কোনো নিরাপদ জায়গা নেই।

শাহপরীর দ্বীপের মাঝারপাড়া, হাজিরপাড়া ও দক্ষিণপাড়ার দেড় শতাধিক বাড়িঘর বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। পানিবন্দি আয়েশা খাতুন জানান, তারা রাত থেকে ঘুমাতে পারেননি, ঘরে আটকা পড়েছেন এবং রান্না করারও সুযোগ পাননি।

টেকনাফ বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা আবদুর রশিদ আহমেদ বলেন, পাহাড় ধসের আশঙ্কায় তারা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজনকে নিরাপদ জায়গায় চলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে মাইকিং করছেন। 

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিনও জানিয়েছেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে তারা ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং করছেন এবং পানিবন্দি লোকজনের খোঁজ নিচ্ছেন। কিছু মানুষ ইতোমধ্যেই আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন বলেও তিনি জানান।