Image description

যদি কোনো যাত্রীকে বাংলাদেশের প্রধান ফটক বা আন্তর্জাতিক গেটওয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যাত্রী সেবার মান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয় তাহলে ৯৯% যাত্রীই বোধহয় নেতিবাচক উত্তর দিবেন। মূল আলোচনায় যাওয়ার আগে এর কারণ হিসেবে মোটা দাগে বলা যায়, পেশাদারিত্ব, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব, পেশাগত দক্ষতা ও নৈতিকতা উন্নয়নে সঠিক প্রশিক্ষণের অভাব। ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য। অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি ও নৈতিক অবক্ষয় অন্যতম কারণ।

বিমানবন্দরে নিরাপদ ও সম্মানজনক যাতায়াত প্রত্যেক নাগরিক তথা যাত্রীদের অন্যতম মৌলিক অধিকার। নিরাপদ, হয়রানিমুক্ত, পরিচ্ছন্ন ও যাত্রীবান্ধব বিমানবন্দর একটি দেশের সম্পর্কে ভালো ধারণা পৌঁছে দেয় বিশ্ববাসীর কাছে। বিমানবন্দর সম্পর্কে ভালো অভিজ্ঞতা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ভ্রমণপিপাসুদের উৎসাহিত করে সেদেশ ভ্রমণে। 

আমি ব্যক্তিগত ও পেশাগত কারণে পৃথিবীর প্রায় অর্ধশতাধিক দেশ ভ্রমণ করেছি, কোনো কোনো দেশ একাধিকবার ভ্রমণের সুযোগ হয়েছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জেএফকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কর্মরত আছি। আমার অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশের প্রধান আন্তর্জাতিক গেটওয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মতো বিশৃঙ্খলা, অব্যবস্থাপনা, ঘুষ, দুর্নীতিসহ যাত্রী হয়রানির মতো বিমানবন্দর আমার চোখে আর পড়েএিই বিমানবন্দরের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে শত শত কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি দিয়ে স্বর্ণ ও মূল্যবান জিনিসপত্র আনা হয়। 

যা প্রায়ই দেশের গণমাধ্যমে উঠে আসে, কিন্তু এদের বিরুদ্ধে অদৃশ্য কোনো শক্তির বলে কার্যকর ও দৃষ্টান্তমূলক তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়না বা নিলেও কিছুদিন পর আবারও সক্রিয় হয়ে ওঠে। এমন কোনো অনিয়ম দুর্নীতি নাই যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভিতরে বাইরে সংঘটিত হয়না। অথচ যারা শরীরের রক্ত পানি করে, দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে পরিবার-পরিজন থেকে দুরে থেকে, দীর্ঘ বছর পর দেশে ফিরেন, সেই প্রবাসীরাই প্রথম হয়রানির শিকার হন নিজ দেশের বিমানবন্দরে।

প্রসঙ্গত, এয়ারপোর্টে প্রবেশের পর কয়েকবার লাগেজ খোলা, দীর্ঘক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখা, বেল্ট-মানিব্যাগ-জুতা-ল্যাপটপ-মোবাইলসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে চেক করার অভিযোগ আছে কাস্টমস কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। অথচ বিদেশে স্ক্যানিং মেশিনের মাধ্যমেই যাবতীয় চেকিং শেষ করা হয়ে থাকে। এতে কোনো ভোগান্তি হয় না। এসব অসহনীয় ভোগান্তি থেকে রেহাই পেতে দীর্ঘদিন ধরেই দেশের বিমানবন্দরগুলোতে ভোগান্তিমুক্ত পরিবেশ দাবি করছিলেন রেমিট্যান্স যোদ্ধারা।

দেশের অন্যতম এই বিমানবন্দরের মাটিও যেন প্রবাসীদের দিকে তাকিয়ে থাকে তাদেরকে হয়রানি করার জন্য, তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করার জন্য । দেশের মাটিতে নেমেই প্রবাসীর অপেক্ষমাণ স্বজনদের সাক্ষাৎ পেতে ব্যাকুল থাকেন, অন্যদিকে স্বজনরাও দীর্ঘ অপেক্ষায় থেকে হতাশ হয়ে পড়েন। অথচ তাদেরকে বিশেষ সুযোগ না দিয়ে উল্টো নানামুখী অবান্তর, অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্নের মুখোমুখি করে দীর্ঘায়িত করা হয় তাদের গন্তব্যের সময়।

শুধু কি এখানেই শেষ! বিমানবন্দরে প্রবাসীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনাও ঘটে প্রায়শই। এ বছরের ৮ জানুয়ারি বুধবার রাত সোয়া ৯টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাঈদ উদ্দিন নামে এক নরওয়ে প্রবাসীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। মারপিটের শিকার যাত্রীর রক্তমাখা শরীর ও কিছু কথাকাটাকাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিও দেখার পর এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। 

এছাড়াও এই বিমানবন্দরে টার্মিনালের একাধিক প্রবেশ দ্বার বন্ধ রেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য করা হয় যাত্রীদের। এ কারণে অনেক যাত্রীর ফ্লাইট মিস করার মত ঘটনাও ঘটে। যাত্রীদের জিম্মি করে বিমানবন্দরের একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা লাইন বাণিজ্য করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এমন অনিয়ম অব্যবস্থাপনা, যাত্রী হয়রানি ও দুর্ভোগের শিকার হওয়ার ঘটনা বিশ্বে বিরল। 

আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপনা, শৃঙ্খলা, পরিচ্ছন্নতা ও যাত্রী পরিষেবার মান দেখে দেশের সংস্কৃতি ও সামাজিক-অর্থনৈতিক বাস্তবতা অনেকটাই আঁচ করা যায়। আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন-অগ্রগতির কথা বলা হলেও, প্রধান বিমান বন্দরের টার্মিনালে প্রবেশ করার সাথে সাথে দেশের প্রকৃত অবস্থা নিয়ে যাত্রীদের হতাশ হতে হয়। প্রবাসী কর্মীরা আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে রেমিট্যান্স প্রবাহের অন্যতম লাইফলাইন। বিশ্বের শতাধিক দেশে দেড় কোটির বেশি প্রবাসী শ্রমিক রেমিট্যান্স পাঠিয়ে অর্থনীতিকে সচল রাখছে। সেসব রেমিট্যান্স যোদ্ধারা নিজ দেশের বিমানবন্দরে এসে প্রতিনিয়ত সীমাহীন দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, অস্বচ্ছতা ও হয়রানির শিকার হচ্ছে।

প্রবাসী কর্মীরা ছাড়াও রপ্তানি বাণিজ্যের অংশীদার, বিনিয়োগকারী, পর্যটক এবং কূটনীতিকরাও এ বিমানবন্দর দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন। বিমানবন্দরের অব্যবস্থাপনা ও যাত্রী দুর্ভোগ আমাদের সামগ্রিক অর্থনীতি ও ভাবমর্যাদার উপর নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করছে।
ঢাকা বিমানবন্দরে অভ্যন্তরের চিত্র দেখলে মনে হবে বিমানবন্দরে কর্মরত সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী হচ্ছেন পুরো দেশের মালিক আর প্রবাসীরা যেন চোর-ডাকাত। প্রবাসীদের নাজেহাল করা যেন তাদের ধর্ম। 

নিরাপত্তা তল্লাশির নামে যাত্রীরা প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হন। অনেক সময় সংঘবদ্ধ চক্র লাগেজ গায়েব করার অভিযোগও পাওয়া যায়। দেশে ফেরার সময় প্রবাসীরা বিশ্বের অন্যান্য এয়ারপোর্টগুলোতে চমৎকার অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশে ফিরলেও নিজ দেশের এয়ারপোর্টে গিয়ে শিকার হন বিড়ম্বনার। 

ঢাকা বিমানবন্দরে অনেকগুলো ধাপে সুকৌশলে প্রবাসীদের নিকট থেকে চাহিদা মাফিক টাকা আদায় করার অভিযোগও রয়েছে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামার সংখ্যা বাড়লে ও বাড়েনি যাত্রী সেবার মান। লাগেজ পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আবার অনেক ক্ষেত্রে দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয় প্রবাসীদের। এই ক্ষেত্রে নির্ধারিত হেল্প ডেস্ক থেকে দায়িত্বশীল কোনো আচরণ কিংবা সৌজন্যতা লক্ষ করা যায় না।

বিমানবন্দরের পরিসর বৃদ্ধি ও সেবার মানোন্নয়নের জন্য গৃহীত পদক্ষেপগুলো যেন চলমান পরিষেবাকে বিঘ্নিত করতে না পারে সর্বাগ্রে সেদিকে নজর দিতে হবে। যেখানে ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন সেক্টরে ওয়ানস্টপ সার্ভিস দেয়া শুরু হয়েছে, সেখানে আমাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। লম্বা লাইনে যাত্রীদের সময়ক্ষেপণের দুর্ভোগ ছাড়াও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অসদাচরণ এবং অনৈতিক ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এর শিকার হচ্ছেন প্রবাসী যাত্রীরা। প্রবাসী কর্মীরা জমিজিরাত বিক্রি করে বিদেশ গিয়ে দিনরাত পরিশ্রম করে দেশে ফেরার পথে শ্রমলব্ধ আয়ে কেনা মূল্যবান জিনিসপত্র বিমানবন্দরে খুইয়ে নিঃস্ব হয়ে বাড়ি ফেরার ঘটনাও ঘটেছে।

বছরের পর বছর ধরে এমন অনিয়ম চলছে বিমানবন্দরের মনিটরিং ব্যবস্থায় কি এসব দেখার কেউ নেই? বিমান বন্দরের এমন অনিয়ম-দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও যাত্রী হয়রানি কঠোর হাতে বন্ধ করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে শুধু অবকাঠামোগতভাবে বিশ্বমানে উন্নীত করলেই হবে না। এর পরিচালন ব্যবস্থাপনাকেও স্বচ্ছ, গতিশীল, দুর্নীতিমুক্ত, নিরাপদ ও যাত্রীবান্ধব করার কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

প্রবাসীরা দীর্ঘদিন ধরেই বিমানবন্দরগুলোতে নানা ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বিদেশ থেকে দেশে ফেরার সময় কিংবা প্রবাসে যাত্রার পথে বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও অযথা সময় নষ্ট, অতিরিক্ত জিজ্ঞাসাবাদ ও অবাঞ্ছিত জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে প্রমাণ পাওয়া যায়, অনেক প্রবাসী মানসিক চাপের কারণে ফ্লাইট মিস করছেন। বিশেষ করে শ্রমনির্ভর পেশায় নিয়োজিত ও শিক্ষায় পিছিয়ে পড়া প্রবাসীদের হয়রানির মাত্রা বেশি। অথচ এই প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চালিকা শক্তি। তাই তাদের প্রতি সহনশীলতা ও সম্মান নিশ্চিত করা অতীব জরুরি। 

আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে বিমানবন্দরে যাত্রী হয়রানি বন্ধে সরকার নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করতে পারে-বিমানবন্দরের সকল ক্ষেত্রে ডিজিটালকরণ ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি- ক) সম্পূর্ণ কাস্টমস ডিজিটালাইজেশন: কাস্টমস প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ডিজিটাল করা হলে যাত্রীদের পণ্য তল্লাশি, শুল্ক আদায় ইত্যাদি ক্ষেত্রে হয়রানি কমে আসবে এবং স্বচ্ছতা বাড়বে। খ) অনলাইন অভিযোগ ব্যবস্থা: একটি সহজে ব্যবহারযোগ্য অনলাইন অভিযোগ পোর্টাল চালু করা যেখানে যাত্রীরা দ্রুত হয়রানির অভিযোগ জানাতে পারবেন এবং অভিযোগের অগ্রগতি ট্র্যাক করতে পারবেন। গ) সিসিটিভি নজরদারি বৃদ্ধি: বিমানবন্দরের প্রতিটি কোণায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং সেগুলোর নিয়মিত পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করা, যাতে যেকোনো অনিয়ম বা হয়রানি তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করা যায়।

জনবল ব্যবস্থাপনা ও জবাবদিহিতা- ক) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ: বিমানবন্দরে কর্মরত সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের (কাস্টমস, ইমিগ্রেশন, বিমান সংস্থা, নিরাপত্তা কর্মী, ক্লিনিং স্টাফ ইত্যাদি) জন্য যাত্রীসেবা, আচরণবিধি এবং প্রবাসীদের প্রতি আন্তরিকতা বিষয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।

খ) পোশাক ও পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করা: সকল কর্মচারীর জন্য নির্দিষ্ট পোশাক ও স্পষ্ট পরিচয়পত্র পরিধান বাধ্যতামূলক করা, যাতে যাত্রীরা সহজেই তাদের চিনতে পারেন এবং অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়ানো যায়। গ) জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা: যাত্রী হয়রানির কোনো অভিযোগ উঠলে দ্রুত তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

সুযোগ-সুবিধা ও প্রক্রিয়া সহজীকরণ- ক) তথ্য কেন্দ্র ও হেল্পডেস্ক: যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত তথ্য কেন্দ্র এবং হেল্পডেস্ক স্থাপন করা, যেখানে তারা যেকোনো প্রয়োজনে দ্রুত সহায়তা পেতে পারেন। খ) শুল্কমুক্ত সুবিধার প্রচার: প্রবাসীরা কী কী পণ্য শুল্কমুক্ত আনতে পারবেন, সে বিষয়ে বিমানবন্দরে স্পষ্টভাবে তথ্য প্রদর্শন করা এবং তাদের সচেতন করা, যাতে অনাকাক্সিক্ষত শুল্ক দাবিতে হয়রানি না হন।

গ) প্রবাসীদের প্রতি সংবেদনশীলতা: প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। তাদের প্রতি বিশেষ যতœশীল ও আন্তরিক হওয়ার জন্য সকল বিমানবন্দর কর্মী ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া।

ঘ) লাগেজ ব্যবস্থাপনা উন্নত করা: লাগেজ হ্যান্ডলিং প্রক্রিয়া দ্রুত ও ত্রুটিমুক্ত করা। বিলম্বে আসা লাগেজ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার মতো ‘হোম সার্ভিস’ চালু করার পরিকল্পনাকে স্বাগত জানানো উচিত এবং দ্রুত বাস্তবায়ন করা। ঙ) ৯৯৯ হেল্পলাইন ও ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট: বিমানবন্দরের ভেতরে-বাইরে জরুরি সেবার জাতীয় হেল্পডেস্ক নম্বর ৯৯৯ প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করা এবং তাৎক্ষণিক ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের কার্যক্রম জোরদার করা, যাতে যেকোনো সমস্যায় দ্রুত আইনগত সহায়তা পাওয়া যায়।

পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন- ক) নিয়মিত নিরীক্ষা ও মূল্যায়ন: যাত্রীসেবার মান এবং হয়রানির ঘটনা পর্যালোচনা করার জন্য নিয়মিত নিরীক্ষা ও মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা। খ) যাত্রী মতামত গ্রহণ: যাত্রীদের কাছ থেকে নিয়মিত মতামত গ্রহণ (ফিডব্যাক ফর্ম, অনলাইন সার্ভে) এবং সেই মতামতের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও উন্নয়নমূলক কাজ করা।

আমার মতে, এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা গেলে বিমানবন্দরে যাত্রী হয়রানি অনেকাংশে কমে আসবে এবং যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ করতে পারবেন। পরিশেষে বিমানবন্দরে যাত্রী হয়রানি রোধে, বাংলাদেশ সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দীর্ঘমেয়াদি ও ফলপ্রসূ পদক্ষেপ গ্রহণের প্রত্যাশা করছি। যেন প্রবাসীরা নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশে যাতায়াত করতে পারেন এবং দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে উৎসাহিত হন।

লেখক:  কলামিস্ট