Image description

বিমান দুর্ঘটনায় নিহত মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তিন শিক্ষক মাহেরীন চৌধুরী, মাসুকা বেগম ও মাহফুজা খানমকে মানবতা ও সাহসিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার (১৯  আগস্ট) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নিহত শিক্ষকদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।

সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "এই স্মৃতি এখনো সবার মনে দগদগে হয়ে আছে। আমরা আপনাদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করতে পারি, কিন্তু এই দুঃসহ স্মৃতি মুছে দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই। তবে এটুকু বলতে পারি, এই শোক আপনাদের একার নয়, জাতি হিসেবে আমরা এই শোক ধারণ করি।"

তিনি নিহতদের পরিবারের সদস্যদের কাছে তাদের প্রিয়জনদের স্মৃতি শুনতে চান। শিক্ষক মাহেরীন চৌধুরীর স্বামী মনসুর হেলাল বলেন, তার স্ত্রী আহত অবস্থায়ও নিজের জীবনের পরোয়া না করে শিক্ষার্থীদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। হাসপাতালে যখন তিনি নিজের সন্তানের কথা জিজ্ঞেস করেছিলেন, তখন মাহেরীন বলেছিলেন, “ওরাও তো আমার সন্তান। ওদের একা রেখে আমি কী করে চলে আসি?”

গত ১৪ আগস্ট মারা যাওয়া শিক্ষক মাহফুজা খাতুনের মেয়ে আয়েশা সিদ্দিকা তার মায়ের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, “আমি ভেবেছিলাম, মা'কে নিয়ে বাড়ি ফিরব। এখন আমার বাবা নেই, মা-ও চলে গেলেন। আমি এতিম হয়ে গেলাম।”

শিক্ষক মাসুকা বেগমের ভগ্নিপতি খলিলুর রহমান বলেন, মাসুকা সবসময় নিজের বাবা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের খোঁজখবর রাখতেন এবং তাদের প্রতি অত্যন্ত যত্নশীল ছিলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই শিক্ষকদের কথা শুনে গর্ববোধ হয় যে, "আমাদের দেশে এমন মানুষ আছে, যারা অন্যের জীবন বাঁচাতে আগুনে ঝাঁপ দিয়েছেন। মানবতার এই দৃষ্টান্ত তারা প্রমাণ করে গেছেন।" তিনি বলেন, এই শিক্ষকরা আমাদের গর্ব এবং তাদের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য যা কিছু করা প্রয়োজন সরকার তাই করবে।

এ সময় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টারা উপস্থিত ছিলেন।