Image description

সাম্প্রতিক সময়ে সংবাদপত্র মালিক সমিতি (নোয়াব) বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও তথ্যপ্রাপ্তি নিয়ে যে বিবৃতি দিয়েছে, তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। বৃহস্পতিবার বিকেলে ফেসবুকে দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে তিনি এই বিষয়ে সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন। একই প্রতিক্রিয়া পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও শেয়ার করেন।

আজাদ মজুমদার নোয়াবের উদ্বেগ স্বীকার করলেও, অন্তর্বর্তী সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করেছে—এই ধরনের অভিযোগ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি প্রতিটি অভিযোগের বিষয়ে আলাদা করে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন:

গণমাধ্যমের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ নেই: আজাদ মজুমদার বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার কোনো গণমাধ্যমের সম্পাদকীয় বা ব্যবসায়িক কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করেনি। বরং, রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণার পরেও সরকার সংযম দেখিয়েছে। আগের সরকারের সময় বন্ধ করে দেওয়া কিছু গণমাধ্যমকে পুনরায় কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

সীমিত প্রবেশাধিকারের অভিযোগ: তার মতে, সাংবাদিকরা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ পেয়েছেন এবং কোনো সাংবাদিককে তার প্রতিষ্ঠানের পরিচয়ের কারণে বঞ্চিত করা হয়নি। সচিবালয়ের অ্যাক্রেডিটেশন প্রক্রিয়ায় যে সংস্কার করা হয়েছে, তা দুর্নীতি রোধ এবং প্রকৃত সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য করা হয়েছে।

চাকরির নিরাপত্তার বিষয়ে: আজাদ মজুমদার জানান, সাংবাদিকদের চাকরি হারানোর পেছনে সরকারের কোনো নির্দেশনা নেই। বরং, এটি গণমাধ্যম মালিকদের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বা ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তের ফল।

সাংবাদিকদের নিরাপত্তা: তিনি বলেন, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই দায়িত্ব গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোকেও ভাগ করে নিতে হবে। তিনি আরও জানান, মিডিয়া সংস্কার কমিশন একটি নতুন 'সাংবাদিক সুরক্ষা আইন' প্রণয়নের প্রস্তাব করেছে, যা সরকার বিবেচনা করছে।

নোয়াবের প্রতি আহ্বান

আজাদ মজুমদার নোয়াবকে নিজেদের ভেতরে নজর দিতে এবং তাদের সদস্যদের কার্যকলাপ পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের বেতন বঞ্চনা, শ্রম অধিকার হরণ এবং অসহনীয় কর্মপরিবেশ তৈরির মতো বিষয়গুলোতে মালিকদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তিনি মনে করেন, গঠনমূলক সমালোচনা গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করে, কিন্তু ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে করা অভিযোগ আসল সমস্যা থেকে মনোযোগ সরিয়ে নেয়।

শেষে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার স্বচ্ছতা, নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।