Image description

গত বছরের ৮ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ৮ আগস্ট এক বছর পূর্ণ করবে। এই এক বছরে সরকারের ১২টি বড় সাফল্যের কথা তুলে ধরেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম। বৃহস্পতিবার তিনি তার ফেসবুকে এক পোস্টে এই তথ্যগুলো প্রকাশ করেন।

সাফল্যগুলো হলো-

শান্তি ও স্থিতিশীলতা: দেশে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হয়েছে এবং নৈরাজ্য ও প্রতিশোধের চক্র বন্ধ হয়েছে। ড. ইউনূসের নৈতিক নেতৃত্ব জাতিকে পুনর্মিলন ও গণতন্ত্রের পথে পরিচালিত করেছে।

অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার: খাদ্য মূল্যস্ফীতি প্রায় ১৪% থেকে অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছে। সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন ৮.৪৮% হয়েছে। এছাড়া রেমিট্যান্স, রপ্তানি এবং এফডিআই প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং টাকার মান ডলারের বিপরীতে বেড়েছে।

বাণিজ্য ও বিনিয়োগ: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সফলভাবে শুল্ক আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। হানদা গ্রুপের মতো বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে, যার ফলে ২৫ হাজার নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে।

গণতান্ত্রিক সংস্কার: সংস্কার কমিশন গঠন করে ৩০টিরও বেশি রাজনৈতিক দলের মধ্যে জাতীয় ঐক্য তৈরি করা হয়েছে। একটি ঐতিহাসিক জুলাই সনদ চূড়ান্ত করা হয়েছে, যা গণতন্ত্রের নতুন যুগের সূচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

জুলাই হত্যাযজ্ঞের বিচার: জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের স্বচ্ছ বিচার শুরু হয়েছে এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচারও শুরু হয়েছে।

নির্বাচন পরিকল্পনা: ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রবাসী, নতুন ভোটার ও নারীদের অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রায় ৮ লাখ পুলিশ, আনসার ও সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা রয়েছে।

প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনগত সংস্কার: বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। পুলিশে মানবাধিকার সেল, বডিক্যাম এবং স্বচ্ছ জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষ চালু করা হয়েছে। এছাড়া আইনগত সংস্কারের মধ্যে গ্রেপ্তারের ১২ ঘণ্টার মধ্যে পরিবারকে জানানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

সংবাদপত্রের স্বাধীনতা: দমনমূলক সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা হয়েছে, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সব মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের অধিকারকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

পররাষ্ট্রনীতি: একক দেশের ওপর নির্ভরতা থেকে সরে এসে বহুমাত্রিক ও ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি গড়ে তোলা হয়েছে। সার্কের পুনরুজ্জীবন এবং আসিয়ানের সদস্যপদ অর্জনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

প্রবাসী ও শ্রমিক অধিকার: সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মালয়েশিয়ায় ভিসা পুনরায় চালু হয়েছে। উপসাগরীয় দেশগুলোতে অনিয়মিত কর্মীদের বৈধতা দেওয়া হয়েছে এবং জাপানসহ বিভিন্ন দেশে তরুণ ও শ্রমিক পাঠানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

শহীদ ও আহত বিপ্লবীদের সহায়তা: জুলাই বিপ্লবের শহীদ ও আহতদের তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। ৭৭৫টি শহীদ পরিবারকে প্রায় ১০০ কোটি টাকা সঞ্চয়পত্র ও ভাতা দেওয়া হয়েছে এবং ১৩ হাজার ৮০০ জন আহত বিপ্লবীর জন্য ১৫৩ কোটি টাকার সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

সামুদ্রিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন: বঙ্গোপসাগরকে 'জলভিত্তিক অর্থনীতির' মূল সম্পদ ঘোষণা করা হয়েছে এবং চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।