সংবাদ প্রকাশের জেরে প্রাণনাশের হুমকি, দুই সহোদরের বিচার দাবি সাংবাদিক অনিমার

সাভার সরকারি কলেজের সভাপতি ইমু ইমরান ও ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ ইকবালের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরে প্রাণভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন সাংবাদিক দিলশান আরা অনিমা। শনিবার (১৬ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন। অনিমা জানান, হুমকি ও হয়রানির শিকার হয়েও তিনি থানায় মামলা করতে পারেননি এবং বাধ্য হয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন।
অনিমা জানান, গত ১৮ মে দৈনিক বাংলাদেশ সময় পত্রিকায় "সাভার সরকারি কলেজের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে ইমু ইমরান কীভাবে ছাত্রদলের সভাপতি হলেন" শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটিতে ইমু ইমরান এবং তার ভাই মাহফুজ ইকবালের নানা অপকর্ম ও দুর্নীতির তথ্য প্রকাশিত হয়। এরপর ২০ জুলাই তালাশ বিডি অনলাইন পত্রিকায় মাহফুজ ইকবালের বিলাসবহুল জীবনযাপন ও হঠাৎ কোটিপতি বনে যাওয়ার বিষয়ে আরও একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদনে প্রায় ৫০ লাখ টাকা মূল্যের একটি নিশান গাড়ি ও সাভারে চাঁদাবাজির মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ সম্পদের তথ্য প্রমাণসহ উল্লেখ করা হয়।
সাংবাদিক অনিমা অভিযোগ করেন, দুটি সংবাদ প্রকাশের পর থেকেই ইমু ইমরান ও মাহফুজ ইকবাল এবং তাদের সমর্থকরা তাকে একাধিক নম্বর থেকে হত্যার হুমকি দিতে থাকে। তিনি জানান, গত ১১ জুলাই রাত সাড়ে দশটার দিকে সাভারের সুমাইয়া রেস্টুরেন্টে ঢুকে ইমু ইমরান ও মাহফুজ ইকবাল তাকে চড়-থাপ্পড় মারেন এবং কোমরে থাকা বিদেশি পিস্তল উঁচিয়ে সরাসরি হত্যার হুমকি দেন। তারা তাকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আর কোনো বাড়াবাড়ি বা সংবাদ প্রকাশ করলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে।
এই ঘটনার পর অনিমা জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাভার মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলেও কর্তব্যরত কর্মকর্তা মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানান এবং তাকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। পরে অনিমা ঢাকা কোর্টে একটি মামলা (মামলা নং– ৩৯৯) দায়ের করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অনিমা জানান, ইমু ইমরান ও মাহফুজ ইকবাল তাদের দলীয় পদ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাভারে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করছেন। তিনি অভিযোগ করেন, মাহফুজ ইকবাল তার দলীয় পদ ব্যবহার করে নিয়ম লঙ্ঘন করে নিজের ছোট ভাই ইমু ইমরানকে তড়িঘড়ি করে কলেজের সভাপতি বানান, যা যোগ্য ছাত্রনেতাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
সাংবাদিক অনিমা বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান। তিনি প্রশাসনের পাশাপাশি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছেও এই দুই নেতার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তার জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান। তিনি একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
Comments