Image description

পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের ই-লার্নিং ও আধুনিক শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণে সরকার আগামী ছয় মাসের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম (সিএইচটি) অঞ্চলের ১০০টি বিদ্যালয়ে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সংযোগ চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে। শুক্রবার (৮ আগস্ট) পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই উদ্যোগ শিক্ষাক্ষেত্রে প্রযুক্তিনির্ভর এক নতুন যুগের সূচনা করবে।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে দুর্গম পাহাড়ি এলাকার শিক্ষার্থীরা শহরের অভিজ্ঞ শিক্ষকদের অনলাইন ক্লাসে অংশ নিতে পারবে, যা শিক্ষার মানে সমতা নিশ্চিত করবে। সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, “এটি শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিতে দক্ষ করে তুলবে, যা তাদের উচ্চশিক্ষা ও কর্মজীবনে সহায়ক হবে।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমাদের প্রধান লক্ষ্য পার্বত্য চট্টগ্রামে মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠা। সবসময় কোটা সুবিধার ওপর নির্ভর করা সম্ভব নয়, তাই প্রতিযোগিতার জন্য ভালো স্কুল-কলেজ গড়ে তুলতে হবে।”

শিক্ষার পাশাপাশি, সরকার পার্বত্য অঞ্চলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্যও বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তিন বছর মেয়াদি বাঁশ চাষ কর্মসূচি, পশুপালন ও মৎস্য প্রকল্প।

উপদেষ্টা বলেন, “বাঁশ চাষ হবে অঞ্চলের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি। এটি পানি সংকট কমাতে এবং পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।” এছাড়া, কাজু বাদাম, কফি ও ভুট্টার চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা দেশব্যাপী ও আন্তর্জাতিক বাজারে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

কাপ্তাই হ্রদকে ‘সোনার খনি’ আখ্যা দিয়ে সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, “এই হ্রদ থেকে মাছ আহরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সম্ভব।” তিনি আরও জানান, পার্বত্য অঞ্চলে একটি প্রকৌশল কলেজ, নার্সিং কলেজ, হোস্টেল, অনাথালয় ও ছাত্রাবাস নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

সরকারের লক্ষ্য পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণকে অর্থনৈতিকভাবে আত্মনির্ভরশীল করা এবং সব সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করা। সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, “পাহাড়ি জনগণ আর পিছিয়ে থাকতে চায় না। আমরা দেশের মূল স্রোতের সঙ্গে একীভূত হতে চাই।” তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে উন্নয়ন কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, “সরকার উন্নয়নের সব দুয়ার উন্মুক্ত করেছে। আমাদের সমাজ, ধর্ম ও রাষ্ট্রের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”

এছাড়া, পাহাড়ি শিক্ষার্থীদের জন্য উন্নত ক্রীড়া পরিবেশ গড়ে তুলতেও সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এই উদ্যোগগুলো পার্বত্য চট্টগ্রামকে শিক্ষা ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী অঞ্চল হিসেবে গড়ে তুলবে বলে আশা করা হচ্ছে।