
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে আরও ৭৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শুধুমাত্র গাজা নগরীতেই প্রাণ হারিয়েছেন ৪৭ জন। এদের মধ্যে ১১ জন নিহত হয়েছেন রুটি সংগ্রহের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায়। রোববার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলের বোমা হামলা ও জোরপূর্বক উচ্ছেদের কারণে শত শত ফিলিস্তিনি গাজা নগরী ছেড়ে পালাচ্ছেন। হাতে গোনা কিছু মালপত্র নিয়ে তারা ট্রাক, ভ্যান বা গাধার গাড়িতে করে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে যাচ্ছেন।
নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের কাছে খোলা আকাশের নিচে অস্থায়ী তাঁবুতে আশ্রয় নিয়েছেন বহু পরিবার, যাদের অনেককেই একাধিকবার নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে হয়েছে। বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি মোহাম্মদ মারুফ বলেন, “আমরা রাস্তার ওপর পড়ে আছি। কী বলব? কুকুরের মতো? না, কুকুরের চেয়ে খারাপ অবস্থায় আছি আমরা।”
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে ইসরায়েলের এই অভিযান শহর দখল এবং প্রায় ১০ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। গত শুক্রবার ইসরায়েল গাজা নগরীকে ‘যুদ্ধক্ষেত্র’ ঘোষণা করে জানায় যে তারা নগরী দখলের ‘প্রাথমিক ধাপ’ শুরু করেছে।
আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ বলেন, “গাজা নগরীজুড়ে হামলা আরও বাড়ছে। ঘরবাড়ি, কমিউনিটি সেন্টার সবই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের জীবনধারার ভিত্তি ভেঙে পড়ছে। এই সব ঘটছে যখন মানুষ দুর্ভিক্ষ, অনাহার আর পানিশূন্যতার মধ্যে রয়েছে। পুরো পরিস্থিতি মানবিক বিপর্যয়ে গড়াচ্ছে।”
আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির প্রধান মিরজানা স্পোলজারিচ এগার ইসরায়েলের গণহারে উচ্ছেদের পরিকল্পনাকে “অবাস্তব ও অগ্রহণযোগ্য” বলে অভিহিত করেছেন। তার মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে এমন কিছু করা নিরাপদ ও সম্মানজনক নয়। তবে আন্তর্জাতিক নিন্দা সত্ত্বেও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার এই অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
Comments