
শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার বৈশা বিল এখন পদ্মফুলের গোলাপি ও সাদা রঙে ছেয়ে এক মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক ক্যানভাসে রূপ নিয়েছে। বর্ষার পানিতে ভরে ওঠা এই বিলে হাজার হাজার পদ্মফুল ফুটে উঠে যেন লালচে-গোলাপি চাদর বিছিয়েছে। শ্রাবণের শুরু থেকে শরতের মাঝামাঝি পর্যন্ত এই বিলের অপরূপ সৌন্দর্য দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করছে।
শেরপুর জেলা সদর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে আবুয়ারপাড়া এলাকায় অবস্থিত বৈশা বিলে বছরের আট থেকে দশ মাস পানি জমে থাকে। ভোরে সূর্যের আলোয় পদ্মফুলগুলো ফোটে এবং সন্ধ্যার আগে কুঁড়িতে মিলিয়ে যায়, যা প্রকৃতির এক অনন্য দৃশ্য। এই সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিন শত শত পর্যটক ছুটে আসছেন। অনেকে নৌকায় চড়ে পদ্মফুলের মাঝ দিয়ে ভ্রমণ করছেন, আবার কেউ কেউ মুঠোফোনে এই দৃশ্য বন্দি করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সোহাগ মিয়া বলেন, “বৈশা বিল আমাদের গর্ব। আগে এর সৌন্দর্য শুধু আমরাই উপভোগ করতাম, এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ছবি তুলতে আসছেন।” দর্শনার্থী নয়ন মিয়া বলেন, “পরিবার নিয়ে এসেছি প্রকৃতি দেখতে। শহরের কৃত্রিম জীবনের বাইরে এমন প্রাকৃতিক নিদর্শন সত্যিই মন মুগ্ধকর।”
তবে, পদ্মফুল ছেঁড়া, কচুরিপানার দখল এবং পলিথিন-আবর্জনার কারণে বিলের পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পরিবেশ সচেতন ব্যক্তিরা বলছেন, প্রশাসনের কঠোর নজরদারি না থাকলে এই প্রাকৃতিক সম্পদ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা সাবরিনা আফরিন জানান, “বৈশা বিলের পরিবেশ সংরক্ষণে একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পর্যটকদের সচেতন করাই এখন আমাদের মূল লক্ষ্য।”
যদিও বৈশা বিলে এখনও পর্যটন অবকাঠামো গড়ে ওঠেনি, তবু এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ। পদ্মফুলের মুগ্ধতা, গ্রামের নির্জনতা এবং প্রকৃতির কোমলতায় বৈশা বিল শেরপুরের হৃদয়ে এক অনন্য স্থান দখল করেছে। এই প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় সকলের সচেতনতা ও দায়িত্বশীল আচরণ এখন জরুরি।
Comments