
কর্মসংস্থানের জন্য হওয়া ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতন হলেও পরিবর্তন আসেনি চাকরির বাজারে। এক বছরের ব্যবধানে বেকার পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে। চাকরির বাজারে এখন হাহাকার। ২০২৩ সালের চেয়ে ২০২৪ সালে বেকারের সংখ্যা বেড়েছে দেড় লাখ।
২০ হাজার টাকা বেতনের চাকরি জোগাড় করতে হিমশিম পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা তরুণদের।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর শ্রমশক্তি জরিপের ত্রৈমাসিক (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২৪) প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০২৪ সাল শেষে দেশে বেকারের সংখ্যা ছিল ২৭ লাখ। ২০২৩ সালে এই সংখ্যা ছিল সাড়ে ২৫ লাখ। গত বছর বেকারের হার ছিল ৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
গত ডিসেম্বর মাস শেষে দেশের শ্রমশক্তি ছিল ৫ কোটি ৮৯ লাখ নারী-পুরুষ। এর মধ্যে পুরুষ ৪ কোটি ৭৪ লাখ ৯০ হাজার এবং নারী ১ কোটি ১৪ লাখ ৪০ হাজার। গত এক দশকে কারখানার শ্রমিকের সংখ্যা ক্রমাগত কমেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সালে শিল্প খাতে শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২১ লাখ।
২০২৪ সালে তা কমে ১ কোটি ২০ লাখে দাঁড়িয়েছে। শিল্প খাতে কর্মসংস্থান কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোট কর্মসংস্থানও কমেছে। দেশে বেকারত্ব কমাতে বড় আকারে ভূমিকা রাখে প্রবাসে কর্মসংস্থান। ২০২৪ সালে এই হার ২২ শতাংশ কমে ১০ লাখে দাঁড়িয়েছে। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের মে মাস পর্যন্ত ৪ লাখের বেশি মানুষ বিদেশে কাজের জন্য গেছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক নুরুল মোমেন বলেন, ‘দেশে চাকরির বাজার হতাশাজনক। প্রতিবছর বহু গ্র্যাজুয়েট বের হয় কিন্তু কর্মসংস্থান সেই তুলনায় খুবই নগণ্য। আরো হতাশার বিষয় হচ্ছে, বহু সংগ্রাম করে এই গ্র্যাজুয়েটরা যখন কোনো চাকরিতে প্রবেশ করছে তখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে খুবই সামান্য বেতনে চাকরি করতে হচ্ছে। যা দিয়ে একটু সচ্ছলভাবে জীবনযাপন করা চ্যালেঞ্জিং।’
Comments