Image description

গায়িকা ঐশীর পথ চলা শুরু হয় একটি রিয়েলিটি শো দিয়ে। পেশাদার গানের অঙ্গনে প্রবেশের পর এই গায়িকা সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসেন গানের চ্যানেল গান বাংলা দিয়ে। চ্যানেলটির উদ্যোগে ঐশীর কয়েকটি ব্যয়বহুল গানের ভিডিও তৈরি হয়। এরপর গানগুলো চ্যানেলটিতে এত বেশি প্রচার পায়, যা সবার নজরে আসে।
গান বাংলার শিল্পী ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান টিএম রেকর্ডসের সঙ্গেও চুক্তিবদ্ধ ছিলেন ফাতিমা তুয যাহরা ঐশী। গান বাংলা চ্যানেলের চেয়ারম্যান কৌশিক হোসেন তাপস গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। এদিকে তাপসের গ্রেপ্তারের পর তাকে নিয়ে কথা বললেন ঐশী।
ফেসবুক পোস্টে তাপসকে অরাজনৈতিক দাবি করে ঐশী লিখেছেন, ছোট জীবনে কত কিছু দেখলাম। অন্যায় করে দিনের পর দিন রাজার হালে পার করতে দেখলাম আবার নিরপরাধে কারাগারে যেতেও দেখলাম। আমি তাপস ভাইয়াকে চিনি ঠিক দশ বছর। এই দশ বছরে আমি তাকে শুধু গান নিয়ে বড় বড় স্বপ্ন দেখতে দেখেছি। নিজে একা না দেখে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিকে স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছেনও। সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে সঙ্গীতাঙ্গন বদলানোর ইচ্ছা পোষণ করার মতো পাগলামি কেউ করে? এটাই ওনার ভুল ছিলো। উনি তো রাজনৈতিক কেউ ছিলেন না। ভাই, আপনারা সুযোগ পাইলে তালি দিয়ে না, নাইচা নাইচা গান শুনাইতেন। হাহা! সাংস্কৃতিক লোককে রাজনৈতিক বানায় দিলেন প্রতিহিংসার জেরে। মিউজিক নিয়ে এতো এগ্রেসিভ কাউকে আমি দেখিনি। বরং মিউজিকের নামে আকাম কুকাম করতে অনেককেই দেখলাম। সেই আকাম করা মানুষগুলাকে আবার বড় গলায় কথাও বলতে দেখি। সত্যকে জেতাতে চাইলে সঠিক তথ্য বের করে উপস্থাপন করেন মানুষের সামনে, যদি সাহস থাকে। সব রহস্য উন্মোচন করে দেন। সবাই জানুক সত্যটা কি!! ভিত্তিহীন মজা তো বহুত নিলেন। আল্লাহর ওয়াস্তে এবার সত্যকে জেতার সুযোগ করে দেন! নাহলে বৈষম্যই তো হইলো। লাভটা কি হইলো তাহলে?
এরপর তার ফেসবুক ভেরিভায়েড আইডিতে এশী লিখেন-দুষ্টু জ্বরে ভুগছে মানুষ! এখন তথাকথিত হিট/ভাইরাল হয় আর টাকা কামায় কারা? যারা নেশা করে ভিডিও বানায় তারা, যাদের কোনো স্কিল নাই তারা, শিক্ষা-দীক্ষা/একাডেমিক যোগ্যতা নাই তারা। ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বা পড়াশোনা করে কোনো লাভ নাই এই যুগে, এরা এখন ফকির। ড্রাইভারের বেতনও ডাক্তারের চেয়ে বেশি। আবার শুনি মেডিকেল এসিস্টেন্টও এখন ডাক্তার পদবী চায়। এত সোজা এমবিবিএস-এর সমান যোগ্যতা অর্জন!? নিজের জীবন বিসর্জন দিয়ে ডাক্তার হয় মানুষ। এতো সস্তা!!!
আর গান বাজনার কথা তো বাদই দিলাম। ভালো গান দিলে শুনে না। মসলা লাগবে! আর মসলা দিলে বলে বেশি হয়ে গেছে। আবার ওমুকের জামা কাপড় পড়া মসলা ভালো না। কিন্তু তোমুকের ন্যাংটা মসলা ভালো। ভালো কে বলে কালো আর কালোকে বলে "আপু বিউটিফুল"।
যেই সিন্ডিকেট পিউর কাজ করতে চায়, ইন্ডাস্ট্রির উন্নতি করতে চায়, তাদের বলে মদখোর। আর যেই সিন্ডিকেটে কাজ বাদে বাকি সব হয়, তারা চুম্মা, মাশাল্লাহ, অসাধারণ। নেতিবাচক কথা বলা কিংবা ভাবা পরিবার থেকে শিখিনি। পরিবেশ বাধ্য করলো। সুস্থ ও সুন্দরভাবে কাজের স্বপ্ন যারা দেখে তাদেরকে গলা টিপে হত্যা করবেন না। নাহলে ভবিষ্যতে জাতি হবে মেধা শূন্য। আমি ছোট মানুষ। মাফ করবেন।
তাপস ‘নিজাম উদ্দিন আউলিয়া’, ‘রঙে রঙে দুনিয়া’, ‘দুষ্টু পোলাপাইন’, ‘দুই কূলে সুলতান’-এর মতো গানগুলো দিয়ে শ্রোতামহলে পরিচিতি পেয়েছেন ঐশী। ২০০০ সালে রংপুর শিশু একাডেমিতে গান শেখা শুরু করেন তিনি। ২০০৩ সালে নোয়াখালীতে মুহাম্মদ শরীফ ও পরে হাফিজ উদ্দীন বাহারের কাছে উচ্চাঙ্গ ও নজরুলসংগীতে তালিম নেন। ঢাকায় এসে ‘হৃদয় মিক্স থ্রি’ অ্যালবামের জন্য শিল্পী বাছাই প্রতিযোগিতার সেরা পাঁচে জায়গা করে নেন তিনি। প্রতিযোগিতার সেরাদের নিয়ে করা মিশ্র অ্যালবামে ‘দখিন হাওয়া’ শিরোনামে একটি গানে কণ্ঠ দেন তিনি। ২০১৫ সালে প্রকাশিত হয় ঐশীর প্রথম একক অ্যালবাম ‘ঐশী এক্সপ্রেস’। ‘মায়া: দ্য লস্ট মাদার’ সিনেমার ‘মায়া’ গানটির জন্য ২০২০ সালে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।