Image description

কুমিল্লার দেবিদ্বারে পাওনা টাকা চাওয়ায় মো. শফিউল্লাহ (৩৮) নামে এক ভ্যানচালককে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে তারই বন্ধু ও গ্যারেজ মালিক রাসেল (৩০)। মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার ভানী ইউনিয়নের ত্রিবিদ্যা গ্রামে রাসেলের অটোরিকশা গ্যারেজে এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডটি ঘটে।

নিহত শফিউল্লাহ ভানী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দিনের ছেলে এবং পেশায় একজন অটোভ্যান চালক ছিলেন। অভিযুক্ত রাসেল একই ইউনিয়নের আন্দিরপাড় এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে এবং একটি অটোরিকশা গ্যারেজের মালিক ও মেকানিক।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শফিউল্লাহর কাছে রাসেল প্রায় ৪৫ হাজার টাকা ধার নিয়েছিল। চার মাস আগে এই পাওনা টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে শফিউল্লাহ তার পাওনা টাকা ফেরত চাওয়ার জন্য রাসেলের গ্যারেজে যান। সেখানে আবারও তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে রাসেল গ্যারেজে থাকা একটি লোহার রড দিয়ে শফিউল্লাহর মাথা ও মুখে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই শফিউল্লাহর মৃত্যু হয়। হত্যার পর রাসেল মরদেহ গ্যারেজের ভেতরে ফেলে সাটার বন্ধ করে পালিয়ে যায়।

ঘটনার পর রাসেল তার প্রতিবেশী সবুজকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। সবুজ দ্রুত স্থানীয়দের নিয়ে গ্যারেজে গিয়ে শফিউল্লাহর মরদেহ দেখতে পান এবং তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে খবর দেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

নিহতের স্ত্রী তাসলিমা বেগম স্বামী হত্যার বিচার চেয়ে বলেন, "আমার তিন ছেলে ও তিন মেয়ে আছে। রাসেল আমার স্বামীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পাওনা টাকা না দিলে না দিত, কিন্তু এভাবে মারবে কেন? আমি ঘাতক রাসেলের ফাঁসি চাই।"

দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াস জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে। এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে রাসেল ও তার বাবা কেরামত আলীর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পলাতক আসামি রাসেলকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।