Image description

শরীয়তপুরের জাজিরায় চাঞ্চল্যকর চোখ উপড়ে হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামী, কুখ্যাত মাদক সম্রাট সুমন শিকদার (২৫) অবশেষে র‍্যাবের হাতে ধরা পড়েছে। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল ২টা ৪৫ মিনিটে মুন্সিগঞ্জের সদর থানাধীন মুক্তারপুর বল্লালবাড়ি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এই গ্রেফতারে এলাকায় স্বস্তির সাটি পড়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পাওনা টাকা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে গত ৬ সেপ্টেম্বর সকালে সুমন শিকদার অটোভ্যান চালক রমজান মোল্লাকে কৌশলে ফোন করে ডেকে নেয়। পরে সহযোগীদের সঙ্গে পরিকল্পিতভাবে তাকে মহর আলী শিকদার কান্দি এলাকার একটি বাঁশবাগানে নিয়ে গিয়ে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়। নির্মমতার চরম উদাহরণ সৃষ্টি করে রমজানের দুটি চোখ ক্রু-ড্রাইভার দিয়ে উপড়ে ফেলা হয়, শরীর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয় এবং ধারালো চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। গুরুতর আহত রমজানকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এই নৃশংস ঘটনায় এলাকাজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। রমজানের স্ত্রী ইসমোতারা বাদী হয়ে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় মামলা দায়ের করলে বিষয়টি দেশব্যাপী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে। ঘটনার ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

ঘটনার পরপরই মামলার গুরুত্ব বিবেচনা করে র‍্যাব-৮-এর অধিনায়ক নির্দেশে সিপিসি-৩ মাদারীপুর একটি বিশেষ টিম গঠন করে। বিশ্বস্ত সোর্স ও আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় র‍্যাব-৮ (মাদারীপুর) এবং র‍্যাব-১১ (নারায়ণগঞ্জ)-এর যৌথ দল রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি চালায়। অবশেষে নিরবচ্ছিন্ন অভিযানের মাধ্যমে ১৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে মুন্সিগঞ্জ সদর থানার মুক্তারপুর বল্লালবাড়ি এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামী সুমন শিকদারকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় র‍্যাব।

গ্রেফতারের পর আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। র‍্যাবের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই র‍্যাব সন্ত্রাস, মাদক, জঙ্গি ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আপোষহীন অবস্থানে রয়েছে। জনগণের জান-মাল রক্ষায় এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে জানায় বাহিনীটি।

কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী সুমন শিকদারের গ্রেফতারের খবরে এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। স্থানীয়রা র‍্যাবের এ সফল অভিযানে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং ভুক্তভোগী পরিবারকে ন্যায়বিচার দেওয়ার জন্য দ্রুত বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছেন।