
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার কিচক ইউনিয়নের মল্লিকপাড়া (পীরপুকুর) গ্রামে সরকারি খাসপুকুর ও যাতায়াতের রাস্তা দখল করে বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে লিজ গ্রহীতাদের বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা জানান, এই কার্যক্রমে তাদের চলাচলের রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে, যা দৈনন্দিন জীবনে সমস্যা সৃষ্টি করছে।
জানা গেছে, ১ একর ৮ শতাংশের সরকারি খাসপুকুরটি বহু বছর আগে উপজেলা পরিষদ থেকে সরকারি বিধি মোতাবেক লিজ নেওয়া হয়েছিল। লিজ গ্রহীতা সুমন মিয়া, সাগর, শাহজাহান ও মুসা পুকুরপাড়ে টিনের বাড়ি নির্মাণ করে প্রায় ৪০ বছর ধরে বসবাস করে আসছেন। সম্প্রতি তারা পুকুরের কিছু অংশ ভরাট করে কলাম তুলে এবং যাতায়াতের রাস্তা দখল করে পাকা বাড়ি নির্মাণ শুরু করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা তোতা মিয়া বলেন, “তারা খাসপুকুর দখল করে বাড়ি নির্মাণ করছে এবং রাস্তা সংকীর্ণ করায় আমাদের চলাফেরায় সমস্যা হচ্ছে। কিছু বলতে গেলে নারী কেলেঙ্কারির মিথ্যা অভিযোগ দেয়। আমরা শুধু রাস্তা ফিরে পেতে চাই।”
আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম ধলু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “পুকুর দখলের বিষয় সরকার দেখবে, আমরা শুধু আমাদের যাতায়াতের রাস্তা চাই।” আব্দুল কুদ্দুস জানান, “৩ বিঘার পুকুর এখন আর ১ বিঘাও নেই। তারা ধীরে ধীরে পুরো পুকুর দখল করছে।”
যুবদলকর্মী শাহিনুর ইসলাম বলেন, “রাস্তা ও পুকুর দখল করে বাড়ি নির্মাণে গ্রামের ৪০০ বাসিন্দার চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। তারা মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করছে। রাস্তার ৮-১০টি গাছও কেটে ফেলেছে। আমরা শুধু চলাচলের রাস্তা চাই।”
অভিযুক্ত সুমন মিয়া বলেন, “আমরা ভূমিহীন হওয়ায় ৪০ বছর আগে এই জমিতে বাড়ি করেছি। পুকুরপাড় ভেঙে যাওয়ায় কলাম তুলে বাড়ি নির্মাণ করছি। পূর্বে পুকুরের মাছ ও লভ্যাংশ কিচক দারুল উলুম মাদ্রাসায় দান করা হতো।” তবে মাদ্রাসার কেশিয়ার জিন্দা হাসান লিটন জানান, গত দুই-তিন বছর ধরে কোনো অনুদান পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান জানান, কিচক মৌজার ১৯৩ দাগের ৩ বিঘা খাসপুকুরটি বর্তমানে ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত জলমহালের তালিকায় রয়েছে এবং এটি ইজারা হয়নি। বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং ইউনিয়ন তহসিলদারকে নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুনরায় নির্মাণ হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Comments