
"বিগত আওয়ামী লীগের আমলে উচ্ছেদের জন্য তিনবার ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করেও তৎকালীন বরিশাল -১ এর সংসদ সদস্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফুপাতো ভাই আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, বরিশাল ২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনূসের হস্তক্ষেপে বন্ধ হয়েছিল উচ্ছেদ অভিযান"।
উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতির, সম্পাদক সহ ২৬ জন নেতাকর্মীসহ সদ্য বহিষ্কৃত ইউনিয়ন চেয়ারম্যানসহ একাধিক চেয়ারম্যানের অবৈধ দখলে হারতা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের জমি। দখল করা সরকারি কয়েক কোটি টাকার জমিতে আওয়ামী লীগের এই সকল নেতাদের বিলাসবহুল ভবন নির্মাণ করে বসবাস করছেন। অনেক নেতাকর্মী দখলকৃত জমিতে ভবন নির্মাণ করে ভাড়া দিয়ে রেখেছেন বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছে। স্থানীয়রা আক্ষেপ করে বলেন ভূমি অফিসের জমি দখল করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কলোনি তৈরি করে রেখেছে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসক ৩ বার ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করলেও তৎকালীন ক্ষমতাশীল আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফুপাতো ভাই বরিশাল ১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল হাসমত আব্দুল্লাহ, উজিরপুর -বানারীপাড়া বরিশাল ২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস, ও সংসদ মনিরুল ইসলাম মনির হস্তক্ষেপে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল তৎকালীন জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।
৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ পতন হওয়ার পরেও বহাল তবিয়াতে দখল করে রয়েছেন হারতা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সুনীল বিশ্বাস সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য বহিষ্কৃত ইউপি চেয়ারম্যান আমল মল্লিক ইউপি সদস্য বিজয় ডাকুয়া সহ সাবেক কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যানসহ ২৬ জন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও সাবেক একাধিক আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান।
হারতা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ সাইফুল ইসলাম তালুকদার জানান, ভূমি অফিসের ৫১ শতাংশ সম্পত্তির মাত্র ৮ শতাংশ জমি ভূমি অফিসের দখলে রয়েছে, বাকী সম্পত্তি নিষিদ্ধ ঘোষিত হারতা আওয়ামী লীগের কমিটি দখল আওয়ামী কলোনী ঘরে তুলেছে। ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, অবৈধ দখলদারদেরকে উচ্ছেদ করে একটা অত্যাধুনিক ভূমি অফিস নির্মাণের করা হোক।
এ বিষয়ে হারতা ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা তহশিলদার রিয়াজ মোরশেদ জানান, ১৩ নং হারতা জে,এল এর হারতা মৌজার ১ নং খতিয়ানের ১৫১৫ নং দাগের ৫১ শতাংশ জমির ২৭ শতাংশ জমি আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতিসহ ২৬ নেতা কর্মী অবৈধভাবে গায়ের জোরে দখল করে রাখেন।
এ বিষয়ে বিগত আওয়ামী লীগ আমলে তিনবার উচ্ছেদের চেষ্টা করলেও তৎকালীন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে উচ্ছেদ সম্ভব হয়নি। স্থানীয় ও ভূমি সেবা প্রার্থীদের দাবী অনতিবিলম্বে হারতা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সম্পত্তি অবৈধ দখলমুক্ত করে প্রাচীন নির্মাণ করে অত্যাধুনিক ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণের দাবি জানান।
হারতা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের জমি সংক্রান্ত বিষয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আলী সুজা জানান, অতি দ্রুত ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সম্পত্তি অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে উচ্ছেদ করা হবে।
অবৈধ দখলদার আওয়ামী লীগ সভাপতি সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান বৃন্দ পলাতক থাকায় ও তাদের ব্যবহারিত মোবাইল ফোনগুলো বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান সুনীল বিশ্বাসের জমাতা এসআই সজল সাহা শশুরের পক্ষ নিয়ে জানান, সম্পত্তিটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কিনা মেপে দেখতে হবে, এবং নোটিশ নিয়ে আসেন ভেঙে দেওয়া হবে।
অপরদিকে সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান পুত্র ছাত্রলীগ নেতা সাগর বিশ্বাস সাংবাদিকদেরকে বলেন ভূমি অফিসের সম্পত্তি এটা কিনা? আপনারা মেপে বুঝিয়ে দিয়ে যান।
হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার অমল কুন্ড বলেন, ১৯৮৮ সালের বন্যা সময় এ জমিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। তবে সম্পত্তি তাহশিলদারের এটাই সত্য।
Comments