Image description

বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ডা: এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগের পূর্বেই নির্বাচনের যে ঘোষনা এসেছে। সেই নির্বাচনকে প্রতিহত করার চেষ্টা, যত ষড়যন্ত্রই দেশ বিদেশ থেকে হোক না কেন। বাংলাদেশের গনতন্ত্রকামী মানুষ সেই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে আগামী দিনে জনগণের প্রতিক নির্বাচিত করে জনাব তারেক রহমানকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিবেন, ইনশাআল্লাহ। তাঁর নেতৃত্বেই ৩১ দফার আলোকে আগামীর বাংলাদেশ হবে, সবার বাংলাদেশ।    

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় ময়মনসিংহ নগরীর টাউন প্রাঙ্গনে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বর্নাঢ্য র‌্যালী পূর্ব এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।  

ময়মনসিংহ মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি আয়োজিত এই আলোচনা সভায় ডা: এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, বিএনপি জনগণের দল। আমাদের নেতা তারেক রহমান আন্দোলন করছেন জনগণের ক্ষমতা, জনগণের মালিকানা, জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। আগামী দিনে গণতান্ত্রিক পরিবেশে একটি স্বচ্ছ ভোট হবে। আর সেই ভোটে জনগণ বেছে নিবে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব তারা কাকে দিবে। কিন্তু আজকাল আমরা অনেক রাজনৈতিক দলের নেতাদের বক্তব্য শুনি। তারা বলেন- এটা হতে দেব না, ওটা হতে দেব না। তাদের যদি ৫৪ বছরের ইতিহাস দেখেন, দেখবেন তারা কেউ কখনো নিষিদ্ধ ছিলেন, কেউ সংসদে ১০টা ২০টা বা ১৮টা সিট পেয়েছেন। কিন্তু জনগণ দেশ পরিচালনার জন্য তাদের ওপর আস্থা রাখেননি জনগণ। তাই জনগণের আস্থা পাবার জন্য কর্মসূচি দিয়ে জনগণের কাছে যান। বিএনপি যেমন ৩১ দফা কর্মসূচি নিয়ে জনগণের কাছে যাচ্ছে, তেমনি আপনার কর্মসূচি নিয়ে জনগণের পাশে যান। জনগণকে চোখ রাঙানি দেখাবেন না, ভয় দেখাবেন না। বিগত ৫ আগস্ট স্বেরাচার পলায়ন করতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু এখনো কিছু কিছু দল হম্পিধম্পি করে কর্তৃত্ববাদীর ভয় দেখান। নিজেদের নিরুঙ্কুশ ভাবেন, কিন্তু মনে রাখবেন- নিরুঙ্কুশ একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলআমিন। আর এই দেশের নিরুঙ্কুশ ক্ষমতা জনগনের হাতে। কাজেই কোন অবস্থাতেই জনগণের বিপক্ষে যাবার চেষ্টা করবেন না। 

এ সময় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ডা: জাহিদ হোসেন বলেন, এক দলীয় বাকশাল থেকে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। আজকে যে বাংলাদেশ আমরা দেখছি, এই বাংলাদেশে আসার জন্য তাঁর কালজয়ী দর্শন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ। অর্থাৎ ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আমরা এই ভূখন্ডে যারা আছি, আমরা সবাই বাংলাদেশি। সেজন্য আজকের এই দিনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। সেই সঙ্গে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বিএনপিকে জনগণের দলে পরিণত করেছে, তাকেও আজকের এই দিনে আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করি, তিনি যেন আমাদের এই নেত্রীকে সুস্থ রাখেন ও ভবিষ্যতে আমাদের আবারও নেতৃত্ব দিতে পারেন। উনার অবর্তমানে আমাদের নেতা তারেক রহমান শুধু বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ করেননি। তিনি ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে দেশের সকল মানুষকে, সকল রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। তাকেও আমরা আজকের এই দিনে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে তাঁর নেতৃত্বের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।  

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, সবার উপওে বাংলাদেশ শ্লোগান নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন আমাদের নেতা তারেক রহমান। ইতোমধ্যে বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষনা করেছেন। এই ফেব্রুারিতেই নির্বাচন হবে এবং সেই নির্বাচনের মধ্যদিয়ে তারেক রহমানের নেতৃত্বে একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো: শরীফুল আলম বলেন, নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। কিন্তু সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এবং দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সজাগ দৃষ্টিভঙ্গিতে যে কোন ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে।  

এ সময় মহানগর বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন, উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক জাকির হোসেন বাবলু, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক অধ্যাপক শেখ আমজাদ আলী, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকার রোকন, যুগ্ম আহবায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক কাজী রানা, একেএম মাহাবুবুল আলম, লিটন আকন্দ, শামীম আজাদসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের র্শীষ নেতৃবৃন্দ।

আলোচনা সভা শেষে একটি বর্নাঢ্য র‌্যালী টাউন হল প্রাঙ্গন থেকে শুরু হয়ে দুর্গাবাড়ী ও নতুন বাজার সড়ক হয়ে নগরীর হরিকিশোর রায় রোডস্থ বিএনপি কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। এতে ময়মনসিংহ মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশগ্রহন করেন।