Image description

চট্টগ্রাম বন্দরে মিথ্যা ঘোষণার আড়ালে সিগারেট তৈরির কাঁচামাল ‘সিগারেট পেপার’ আমদানির চেষ্টা ব্যর্থ করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এই জালিয়াতির মাধ্যমে সরকার প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কর্মকর্তারা।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস সম্প্রতি ‘আরএম এন্টারপ্রাইজ’ ও ‘স্মার্ট মুভ’ নামে দুটি প্রতিষ্ঠানের চালান জব্দ করে। ঢাকাভিত্তিক আরএম এন্টারপ্রাইজ হংকং থেকে ১৬ টন ‘স্ট্র পেপার’ এবং স্মার্ট মুভ ‘পেপার রিবন’ নামে প্রায় ১০ টন সিগারেট পেপার আমদানির ঘোষণা দিয়েছিল। বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও কুয়েটের পরীক্ষাগারে পরীক্ষার পর নিশ্চিত হয়, চালানগুলোতে আসলে সিগারেট পেপার ছিল।

কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, এসব চালান ঘোষিত নামে ছাড়লে সরকার আরএম এন্টারপ্রাইজের চালানে শুল্কবাবদ ১ কোটি টাকা ও ভ্যাটবাবদ ৮৫ কোটি টাকা এবং স্মার্ট মুভের চালানে শুল্কবাবদ ৭০ লাখ টাকা ও ভ্যাটবাবদ ৫০ কোটি টাকা হারাত। এর আগে আরএম এন্টারপ্রাইজ ২৭ কোটি টাকার ৮টি চালানে ৪৮৯ টন সিগারেট তৈরির কাঁচামাল আমদানি করে, যার বেশিরভাগ অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভ্যাট কর্মকর্তা জানান, এসব কাঁচামাল থেকে প্রাপ্য ভ্যাট প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা হতে পারে, কিন্তু অস্তিত্বহীন ঠিকানার কারণে তা আদায় প্রায় অসম্ভব। জাপান টোব্যাকোর এক কর্মকর্তা জানান, প্রতিকেজি সিগারেট পেপার দিয়ে ১০ হাজার সিগারেট তৈরি সম্ভব, যার খুচরা মূল্যে ৮৩% ভ্যাট আরোপিত হয়।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার তফসির উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, “মিথ্যা ঘোষণার জন্য জরিমানাসহ সিগারেট পেপারের শুল্ক পরিশোধ না করলে চালান ছাড়া সম্ভব নয়। আমদানিকারকরা যোগাযোগ না করলে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তিনি জানান, আগের চালানের রেকর্ড যাচাই করে রাজস্ব আদায়ে ভ্যাট অফিসকে অনুরোধ জানানো হবে।

আরএম এন্টারপ্রাইজের মালিকের আত্মীয় মোহাম্মদ জয় দাবি করেন, তারা স্ট্র পেপার ও এসিটেট টো আমদানি করেছেন, সিগারেট কোম্পানিকে বিক্রি করেননি। স্মার্ট মুভের মালিক কামরুল ইসলাম জানান, তিনি তার কোম্পানির নাম অন্যের এলসি খুলতে দিয়েছিলেন। তবে ভ্যাট বিধি অনুযায়ী, ট্রেড লাইসেন্স ভাড়া দেওয়া বেআইনি।

কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, এ ধরনের জালিয়াতি বন্ধে কঠোর নজরদারি ও আইনি ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে।