বাবা বক্তব্য দিলেই জেলে আমাকে অমানবিক নির্যাতন করা হতো: খন্দকার পবন

বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের কনিষ্ঠ ছেলে খন্দকার আকতার হামিদ পবন বলেছেন, স্বৈরাচারী শাসনের ১৭ বছরে তিনি ২০ বার কারাভোগ করেছেন। মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় তাকে জেলে যেতে হয়েছে এবং শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। তিনি জানান, ওয়ান-ইলেভেনের সময় তার বাবাকে নত করতে না পারায় সেনা ও পুলিশ বারবার তাকে প্রহার করেছে। জেলখানায়ও তাকে শান্তিতে থাকতে দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, “আমার বাবা যখনই ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছেন বা জনগণ ও বিএনপির পক্ষে কথা বলেছেন, তখনই জেলে আমাকে জেল কোড আইন লঙ্ঘন করে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। পানি চাইলে পানি দেওয়া হতো না, বলা হতো—কেন তোর বাবা খালেদা জিয়া ও বিএনপির পক্ষে কথা বলে? আমাকে মেরে রক্তাক্ত করা হতো।”
তিনি আরও বলেন, “আল্লাহ দিন ফিরিয়েছেন, ফ্যাসিবাদী সরকার থেকে এদেশের মানুষকে মুক্ত করেছেন।”
শনিবার (১৬ আগস্ট ২০২৫) সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার কলিয়া ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত ৩১ দফা প্রচারণা ও পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খন্দকার আকতার হামিদ পবন বলেন, “খন্দকার পরিবারের প্রতিটি সদস্য গত ১৭ বছর ধরে অন্যায়, অত্যাচার ও জুলুমের শিকার হয়েছে। আমরা জিয়া পরিবার ও বিএনপিকে কখনো ছেড়ে যাইনি। দলের হাইকমান্ড থেকে তৃণমূল পর্যন্ত আমার গ্রহণযোগ্যতা আছে। আমরা কষ্ট করেছি, জেল খেটেছি, রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। দলের মানুষ, তারেক রহমান ও বেগম খালেদা জিয়া আমাকে ভালোবাসেন। তাই আমি বিশ্বাস করি, আল্লাহর দয়ায় মানিকগঞ্জ-১ (ঘিওর, দৌলতপুর, শিবালয়) আসনে বিএনপির মনোনয়ন আমাকেই দেওয়া হবে।”
মুক্তিযুদ্ধ ও জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করে তিনি বলেন, “১৯৭১ সালে জিয়াউর রহমান নিজের জীবন বাজি রেখে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং মাঠে থেকে যুদ্ধের নেতৃত্ব দেন। তিনি গেরিলা যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করেন এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে নিয়ে যুদ্ধ করেন। লাখো মানুষ শহীদ হয়েছেন, মা-বোনেরা সম্ভ্রম হারিয়েছেন, তবুও এদেশের প্রতিবাদী মানুষ মাথা নত করেনি। বাংলাদেশ এমন এক উঁচু জাতি, যারা কখনো পরাধীনতা মেনে নেয় না।”
তার বড় ভাই আব্দুল হামিদ খান ডাবলুর স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, “আমার ভাইয়ের স্বপ্ন ছিল ঘিওর, দৌলতপুর ও শিবালয়ের মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থাকা। তিনি তা করতে পারেননি, আল্লাহ তাকে নিয়ে গেছেন। আমি আমার বাবার সংসদীয় আসনে এবং ভাইয়ের স্থানে এসে এলাকার মানুষের সেবা করতে চাই।”
কলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি লাভলু মোল্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রয়াত খন্দকার আব্দুল হামিদ ডাবলুর স্ত্রী নাসিমা হামিদ শিমু, ছেলে অরভিল খন্দকারসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
Comments