Image description

পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে এফ করিম আলিম মাদ্রাসায় আল ফাতাহ প্রকাশনীর দেওয়া ১৫ হাজার টাকা ফেরৎ দিতে বলায় গভর্নিং বডির সভাপতি, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও টিয়ার সদস্যর বিরুদ্ধে উল্টো স্বেচ্ছাচারিতা ও খামখেলিপনার অভিযোগ এনে ক্লাস বর্জন করে সংবাদ সম্মেলন এবং মানববন্ধন করেছে শিক্ষক ও কর্মচারীগণ। 

আজ শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো: রিয়াজুল ইসলাম। 

জানা গেছে, ইন্দুরকানী এফ করিম আলিম মাদ্রাসায় গত মে মাসে ছাত্র-ছাত্রীদের বই কেনা এবং মাদ্রাসার উন্নয়নের জন্য আল ফাতাহ প্রকাশনী থেকে প্রতিনিধিগণ এসে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে ১৫ হাজার টাকা দেয়। বিষয়টি শিক্ষকরা জানতে পেরে বলপ্রয়োগ করে প্রভাষক আলী আকবার বেলায়েত (বাবুল মাল) ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষর কাছ থেকে টাকা গুলো নিয়ে গিয়ে অন্য শিক্ষকদের মাঝে দিয়ে দেয়। পরে বিষয়টি মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভাপতি জানতে পেরে শিক্ষকদেরকে প্রকাশনীর টাকা ফেরৎ দিতে বলেন। তা না হলে তিনি জুলাই মাসে শিক্ষক- কর্মচারীর বিলে স্বাক্ষর করবে না। বিষয়টি নিশ্চিত হলে শিক্ষকগণ উল্টো আন্দোলন করেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানান, এই মাদ্রাসাটি একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন যাবৎ প্রতিষ্ঠানটিতে অনিয়ম ও দুর্নীতির ব্যাপক অভিযোগ উঠেছে। ইদানীং মাদ্রাসাটি ১০টায় শুরু হয়ে ১টার মধ্যেই ছুটি হয়ে যায়। শিক্ষকদের আগমন প্রস্তানেও নেই কোন তোয়াক্কা। এখানের কর্মরত কিছু শিক্ষকদের রয়েছে একাধিক কর্মক্ষেত্র। যার কারনে শ্রেণি কক্ষে সঠিক ভাবে পাঠদান করাতে ব্যাহত হচ্ছে। 

মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ রিয়াজুল ইসলাম জানান, ছাত্র-ছাত্রীদের বই কেনা এবং মাদ্রাসার উন্নয়নের জন্য প্রকাশনী লোকরা এসে আমার কাছে ১৫ হাজার টাকা দেয়। এটা শিক্ষকরা জানতে পেরে শিক্ষক বাবুল মাল আমার কাছ থেকে টাকা গুলো নিয়ে গিয়ে অন্য শিক্ষকদের মাঝে দিয়ে দেয়। পরে বিষয়টি মাদ্রাসার কমিটির সভাপতি জানতে পেরে শিক্ষকদেরকে প্রকাশনীর টাকা ফেরৎ দিতে বলেন। আমি শিক্ষকদের কাছে টাকা ফেরৎ দিতে বললে তারা আমার ও কমিটির ওপর উল্টো আন্দোলন করেছে। তাদের বেতন গতকালই একাউন্টে ঢুকে গেছে। 

গভর্নিং বডির সভাপতি অধ্যক্ষ মোঃ জহিরুল হক বলেন, আমি মাদরাসায় ভিজিটে গিয়ে জানতে পারি প্রকাশনীর লোক এসে টাকা দিয়ে গেছে। তারা প্রতি বছর মাদ্রাসার উন্নয়নের জন্য টাকা দেয়। পরে আমি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন- আমার অফিস কক্ষে শিক্ষকরা এসে বলপ্রয়োগ করে টাকা গুলো নিয়ে যায়। 

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিনের অনিয়মের বিষয়ে চাপ প্রয়োগের কারণে এবং বিশেষ করে প্রকাশনীর ১৫ হাজার টাকা ফেরত চাওয়ায় গভর্নিং বডি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষর বিরুদ্ধে এটা করেছে। আমি কোন অন্যায়, অনিয়মকে প্রশ্রয় দিব না। 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বলেন, বিষয়টি আমি আপনার কাছ থেকে জানতে পারলাম। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে, ইনশাআল্লাহ। 

উল্লেখ্য; গত বছরের (৫ আগষ্ট) আন্দোলনে সৈরাচার সরকারের পতনের পরে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসলে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহ আলম ও উপাধ্যক্ষ মোঃ ইকবাল হোসেনকে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়।