
ঢাকার ধামরাই পৌরসভা একটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে হাজারো মানুষ। রাস্তায় বছরের পর বছর পানি জমে থাকায় চলাচলে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। একপ্রকার পানিবন্ধী অবস্থায় রয়েছে শতাধিক বাড়ির মানুষ। ঘর থেকে বের হলেই পানি। সারা বছর পানি জমে থাকে। নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা নেই। সাপসহ বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়ের ভয় নিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে স্থানীয়দের। এলাকায় রয়েছে কয়েকটি বিদ্যালয়। চলাচলের রাস্তা সব সময় পানি জমে থাকায় বিদ্যালয়ে দিন দিন শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। অভিভাবকরা তাদের কোমল মতি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে সাহস পায় না।
এমন দৃশ্য চোখে পড়ে ধামরাই পৌরসভার ছোট চন্দ্রাইল এলাকায় ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। দীর্ঘদিন ধরে এমন জলাবদ্ধতা থাকায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জ্যোতিবিদ্যা স্কুলের পিছন থেকে ছোট চন্দ্রাইল বাজার পর্যন্ত এমন দৃশ্য দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, একদিকে জীবনযাত্রার মান ব্যাহত হচ্ছে অপরদিকে পাশেই রয়েছে প্রেসিডেন্সী স্কুল এন্ড কলেজ, জ্যোতিবিদ্যা স্কুল, ফয়সাল স্কুল এন্ড কলেজ, অষ্টেলিয়া ব্লো স্কুল নামে প্রাইভেট বিদ্যালয়ের। রাস্তায় পানি জমে থাকার কারনে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে ঠিক মতো যেতে পারছে না। ফলে শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
ছোট চান্দাইল এলাকায় প্রায় সহস্রাধিক পরিবার বসবাস করে। সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তাঘাট ও বাড়ির আঙিনায় পানি জমে যায়। মাসের পর মাস এই জলাবদ্ধতা স্থায়ী হওয়ায় ঔই এলাকার আন্চলিক প্রধান সড়ক পানি জমে প্রায় অচল হয়ে থাকে। অপরিকল্পিত নগরায়ণ, সঠিক পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার অভাব এবং জলাশয় ভরাট হওয়ার কারণে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবী।
এই জলাবদ্ধতার সবচেয়ে বড় শিকার হয়েছে শিক্ষার্থীরা। ছোট চন্দ্রাইল অবস্থিত দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে হাঁটুসমান পানি জমে থাকে। এতে করে শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াত করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। অনেক শিক্ষার্থী বাধ্য হয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে, যার ফলে তাদের পড়ালেখার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষ করে বর্ষাকালে এই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে এলাকাবাসীর দুর্ভোগের শেষ নেই। সব সময় রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে থাকে। অসুস্থ রোগী বা বয়স্কদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও চরম বিপাকে পড়তে হয়। দীর্ঘদিন পানি জমে থাকায় এলাকায় পানিবাহিত রোগ ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়াসহ নানা ধরনের রেগের প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। পাকা, আধাপাকা বা কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পানির কারণে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি না থাকায় এবং প্রশাসনের কাছে বারবার আবেদন করেও কোনো সুরাহা মেলেনি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
প্রেসিডেন্সী স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা জরুরী এবং জলাবদ্ধতা নিরসনে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ না করলে এ সমস্যা সমাধান হবে না। ছোট চন্দ্রাইল এলাকার জলাবদ্ধতা শুধু একটি স্থানীয় সমস্যা নয়, এটি হাজারো মানুষের মৌলিক সমস্যা। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে এবং শিক্ষা থেকে বন্চিত হচ্ছে কোমল মতি শিশুরা।
Comments