Image description

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার তেঁতুলিয়া-বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে জেলেদের জালে আশানুরূপ মাছ ধরা পড়ছে না। সারাদিন ও রাত নদীতে জাল ফেলেও অনেক জেলে প্রায় খালি হাতে নদীতীরে ফিরছেন। এতে ইলিশসহ অন্যান্য মাছের সংকটে উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে শূন্যতা বিরাজ করছে। জেলে পরিবারগুলো ঋণের কিস্তি ও দাদনের দায়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

গত বছর এই সময়ে দশমিনার হাট-বাজারগুলো ইলিশ বেচাকেনায় মুখরিত থাকলেও এখন সেখানে নীরবতা। ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যে নদীতে প্রায় দুই মাস মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পরও জেলেদের জালে ইলিশ মিলছে না। সারাদিন নদীতে জাল ফেলে মাত্র দুই থেকে চারটি মাছ পাওয়া যাচ্ছে, যা দিয়ে ইঞ্জিন-চালিত নৌকার তেলের খরচও মেটানো যায় না। ফলে হাজার হাজার জেলে পরিবারের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।

স্থানীয় জেলেরা জানান, “নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও নদীতে মাছ নেই। পরিবার-পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে আছি। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সামনের দিনগুলো কীভাবে কাটবে, তা নিয়ে চিন্তায় আছি।”

উপজেলার মৎস্য ব্যবসায়ী মো. মিরাজ খান বলেন, “তেঁতুলিয়া-বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে কোনো মাছ নেই। জেলেরা ও আমরা মৎস্য ব্যবসায়ীরা চরম কষ্টে আছি।” ঘাট ও হাট-বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, মাছের সরবরাহ প্রায় নেই বললেই চলে। জেলে ও আড়তদাররা অলস সময় পার করছেন।

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, দশমিনায় প্রায় ১০ হাজার ১৭০ জন জেলে রয়েছেন। নিষেধাজ্ঞার সময় সাড়ে পাঁচ হাজার জেলেকে সরকার ২০ কেজি হারে চাল সহায়তা দিয়েছে। তবে মাছ না ধরা পড়ায় দাদন ব্যবসায়ীরাও বিপাকে পড়েছেন। জেলেরা মহাজনের দাদনের টাকা পরিশোধ করতে পারছেন না।

দশমিনা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহাবুব আলম তালুকদার জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য নষ্ট হওয়া এবং তেঁতুলিয়া-বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর গভীরতা কমে যাওয়ায় ইলিশের প্রজনন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে নদীতে ইলিশের আকাল দেখা দিয়েছে।

তিনি বলেন, “উপজেলার নদীসীমার আট-দশটি স্পট ভরাট হয়ে গেছে। এগুলো ড্রেজিং করা গেলে নদীতে আবার ইলিশের দেখা মিলতে পারে।”