
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনাহাট মোস্তফাবিয়া কামিল মাদ্রাসার মুফাসসির ও হাতীবান্ধা উপজেলা জাতীয় ইমাম কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মাওলানা আব্দুল কাদের এবং হাতীবান্ধা উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান সেলিমের বিরুদ্ধে প্রায় ৪০ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও চেক জালিয়াতির অভিযোগে মামলা হয়েছে।
নারায়ণ চন্দ্র রায় নামে একজন মাদ্রাসা শিক্ষকের অভিযোগ করেছেন, ইট দেওয়ার কথা বলে আব্দুল কাদের তার কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা গ্রহণ করে চেক প্রদান করেন। সম্প্রতি চেকটি ডিজঅনার হলে তিনি লালমনিরহাট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন।
অন্যদিকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সাহেদার রহমানও কম দামে ইট পাওয়ার শর্তে ২৪ লাখ টাকা দিয়েছেন। তবে ইট সরবরাহ না হওয়ায় তিনিও পৃথক একটি মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাওলানা আব্দুল কাদের ও শামসুজ্জামান সেলিম যৌথভাবে “মেসার্স জে. আর. এস. ব্রিকস” নামে ইটভাটা স্থাপন করেন। এরপর বিভিন্নজনের কাছ থেকে অগ্রিম ইট বিক্রির নামে লাখ লাখ টাকা সংগ্রহ করেন। এ সময় টাকা দাতাদের গ্রান্টার হিসাবে আব্দুল কাদের নিজের নামে চেক না দিয়ে শামসুজ্জামান সেলিমের নামের ব্যাংক একাউন্টের চেক দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন।
এলাকাবাসী ও অন্যান্য ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মাওলানা আব্দুল কাদের বছরের পর বছর হজ্ব ও ব্যবসার কারণে মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থেকেও বেতন তুলেছেন। ২০২৪ সালে হজ্বের কারণে তিনি ৪১ দিন, ২০২৫ সালে ৩৩ দিন অনুপস্থিত ছিলেন। শুধু তাই নয়, প্রতিবছর বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে গিয়ে সপ্তাহের পর সপ্তাহ বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকেন না।
তবে মাওলানা আব্দুল কাদের জানান, তিনি মধ্যস্থতাকারী হয়ে নারায়ণ চন্দ্র রায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে শামসুজ্জামান সেলিমকে দিয়েছেন মাত্র। এ সময় তার নিজ নামীয় একটি দিয়েছেন নারায়ণ চন্দ্র রায়কে। সেই চেক দিয়ে মামলা করেছেন নারায়ণ চন্দ্র রায়।
অন্যদিকে, শামসুজ্জামান সেলিম কয়েক কোটি টাকার চেক জালিয়াতির একাধিক মামলায় পলাতক রয়েছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনাহাট মোস্তফাবিয়া কামিল মাদ্রাসার সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জানান, অভিযোগের বিষয়টি জানা নেই; তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Comments