Image description

নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার গড়াডোবা ইউনিয়ন পরিষদের নারী ইউপি সদস্য মঞ্জুরা আক্তারের বিরুদ্ধে সরকারি ৫টি প্রকল্পের কাজ না করেই বা নামেমাত্র কাজ করে বিপুল পরিমাণ সরকারি প্রকল্পের টাকা টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অত্র ইউনিয়ন পরিষদের ১১ জন সদস্য মিটিং করে ও-ই মহিলা ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছেন।

কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইমদাদুল হক তালুকদার অনাস্থার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অভিযুক্ত মঞ্জুরা আক্তার ও-ই ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইউপি সদস্য মঞ্জুরা আক্তার বিগত ২০২১ সাল থেকে ২০২৪ ইং পর্যন্ত সরকারি ৫টি প্রকল্পের সভাপতি ছিলেন।

প্রকল্পগুলোর মধ্যে ২০২১-২২ অর্থবছরে টিআর বরাদ্দের আওতায় ইউনিয়ন পরিষদের সাবমার্সিবল ওয়াটার পাম্প স্থাপন, আসবাবপত্র ক্রয় ও অন্যান্য খাতে ২ লাখ ৭৩ হাজার ৩'শ ১০ টাকা বরাদ্দ হলেও কোনো কাজ করেননি ও-ই মহিলা ইউপি সদস্য। ২০২২-২৩ অর্থবছরে টিআর (২য় পর্যায়) বরাদ্দের আওতায় বাঁশাটি-বৈখরহাটি রাস্তায় জনৈক আবুল কাশেমের ক্ষেতে ইউড্রেন নির্মাণের নামে ৭১ হাজার ৮'শ ৩৭ টাকা বরাদ্দ হলেও কোনো কাজ করেননি। মূলত এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয় এলজিএসপি-০৩ এর আওতায়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কাবিটা (১ম পর্যায়) বরাদ্দের আওতায় বাাঁশাটি বাজারের পাকা রাস্তার মোড় থেকে রবিকুলের দোকান পর্যন্ত রাস্তাটি বালু ও খোয়া দিয়ে সংস্কার করার কথা থাকলেও নামমাত্র কাজ করে বেশিরভাগ টাকা আত্মসাৎ করেন। 

একই অর্থবছরে টিআর (১ম পর্যায়) বরাদ্দের আওতায় বাঁশাটি গ্রামের তারামিয়ার পুকুর পাড় থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসেমের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত বাবদ ৫২ হাজার এবং টাংগুয়া মসজিদ থেকে আঙ্গারোয়া পর্যন্ত রাস্তা মেরামত বাবদ আরও ৫২ হাজার টাকার বিল তুললেও কোনো কাজ করেননি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ইজিপিপি বরাদ্দের আওতায় বাঁশাটি বাজার থেকে আঙ্গারোয়ার একটি পুকুরপাড় পর্যন্ত রাস্তা মেরামত বাবদ ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা তুলেন। ওই প্রকল্পেরও কোনো কাজ করা হয়নি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মঞ্জুরা বেগম জানান, তিনি সরকারি কোন প্রকল্পের সাথে জড়িত নয়। ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের ওপর দায় চাপিয়ে তিনি আরও জানান, সচিব তাকে প্রকল্পের সভাপতি বানিয়ে সচিব নিজেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এবিষয়ে তিনি অভিযোগও করেছেন বলে জানিয়েছেন।

গড়াডোবা ইউনিয়নের প্রশাসক প্রশাসক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, মহিলা ইউপি সদস্য মঞ্জুরা আক্তারের বিরুদ্ধে স্থানীয় এলাকাবাসী ও অন্যান্য ইউপি সদস্যদের অভিযোগ সমূহ তদন্ত করা হয়েছে। একাধিক অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। 

এছাড়াও তার বিরুদ্ধে পরিষদের তথ্য ফাঁস, সভায় বাইরের লোক নিয়ে আসা, সহকর্মী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং জনগণের সাথে শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ, অসদচারণ এবং নিষিদ্ধ রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে সখ্যতার অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে রবিবার ইউনিয়ন পরিষদের ১১ জন সদস্য তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেছেন।’ 

কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমদাদুল হক তালুকদার জানান, আমি নিজেও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নিয়ে মঞ্জুরা আক্তারের একাধিক প্রকল্প তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। তিনি আমার সঙ্গেও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন। ইউপি সদস্যদের অনাস্থা প্রস্তাবটি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবো। দুর্নীতির বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।