মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে চা বাগান পরিদর্শনে আসা পর্যটকদের জন্য প্রবেশ ফি চালুর ঘোষণা দিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। শনিবার(১৭ মে) শ্রীমঙ্গলের বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের সভাকক্ষে চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই ঘোষণা দেন। 

তিনি জানান, এই প্রবেশ ফি থেকে প্রাপ্ত অর্থ চা শ্রমিকদের কল্যাণে ব্যয় করা হবে।

সভায় চা শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি প্রসঙ্গে ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, "চায়ের দামের সঙ্গে বেতন বৃদ্ধির বিষয়টি সম্পর্কিত। নিলামে নির্ধারিত হারের চেয়েও বেশি দামে চা বিক্রি হচ্ছে। তাই এই পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেতন বাড়ানো উচিত। চা বোর্ডের চেয়ারম্যান আমাকে জানিয়েছেন, বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং শিগগিরই তা বাস্তবায়ন করা হবে।"

চা শ্রমিক নেতারা সভায় তাদের বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। জুড়ি ভ্যালির সহ-সভাপতি শ্রীমতি বাউড়ি বলেন, "প্রতি বছর অনেক নারী চা শ্রমিক জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। চা বাগানে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। নারী শ্রমিকদের জন্য ভালো মানের হাসপাতাল এবং চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি, শৌচাগারের অভাবে তারা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। তাই চা বাগান এলাকায় শৌচাগার নির্মাণের জোর দাবি জানাচ্ছি।"

তাদের অন্যান্য দাবির মধ্যে ছিল, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সংস্কার ও দ্রুত নির্বাচন, চা শ্রমিকদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা, মাতৃত্বকালীন ছুটি বৃদ্ধি, স্থায়ীভাবে ভূমির অধিকার, নারী শ্রমিকদের জন্য শৌচাগার নির্মাণ এবং জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা।

প্রধান অতিথি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন শ্রমিকদের দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। এর আগে, তিনি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শকের কার্যালয়ের শুভ উদ্বোধন করেন।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ইসরাইল হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেন, বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপপরিচালক মহব্বত হোসাইন, শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসলাম উদ্দিন, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের উপদেষ্টা তপন দত্ত, সহ-সভাপতি পংকজ কন্দ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা, কোষাধ্যক্ষ পরেশ কালিন্দী, বাংলাদেশ চা শ্রমিক আদিবাসী ফোরামের সভাপতি পরিমল সিং বাড়াইক এবং নারী শ্রমিক নেত্রী গীতা রানী কানু প্রমুখ।