উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত: থামছে না দগ্ধদের আসা, হাসপাতালে স্বজনদের আহাজারি

রাজধানীর উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার পর বেশ কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও দগ্ধ ও আহতদের হাসপাতালে আসার স্রোত এখনো থামেনি। একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন হাসপাতালের দিকে ছুটে আসছে। প্রতিটি অ্যাম্বুলেন্স থেকে ভেসে আসছে স্বজনদের বুকফাটা কান্নার আওয়াজ, যা হাসপাতালের পরিবেশকে আরও ভারি করে তুলছে।
সোমবার (২১ জুলাই) বেলা ২টার পর থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইনস্টিটিউটে অ্যাম্বুলেন্স আসা শুরু হয় এবং সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্তও তা অব্যাহত রয়েছে। দুর্ঘটনার তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে বেশ কিছু শিশু শিক্ষার্থী ভয়াবহভাবে দগ্ধ হয়েছে। গত এক ঘণ্টায় অন্তত ১৫টিরও বেশি অ্যাম্বুলেন্স দগ্ধ রোগী নিয়ে বার্ন ইউনিটের জরুরি বিভাগে প্রবেশ করেছে। নিয়মিত বিরতিতে আসা অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেনের আওয়াজে আশপাশের এলাকা ভারি হয়ে উঠছে।
হাসপাতালের চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, এখনো নতুন করে দগ্ধ রোগী আসছে। অনেক শিশুর শরীরের ৬০-৭০ ভাগ পর্যন্ত পুড়ে গেছে, এবং তাদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য চিকিৎসকরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। হাসপাতাল এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে; দগ্ধ রোগীদের স্বজনদের আহাজারিতে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। অনেক স্বজন এখনো তাদের প্রিয়জনদের হন্যে হয়ে খুঁজছেন।
এদিকে, অ্যাম্বুলেন্সগুলো যেন কোনো প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন না হয়, সে জন্য ঢাকা মেডিকেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং চানখারপুল এলাকায় কয়েক শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী কাজ করছেন। তাদের পাশাপাশি পুলিশ ও সেনাবাহিনীকেও উদ্ধার ও সহযোগিতা কার্যক্রমে সক্রিয় দেখা গেছে।
ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও বিমানবাহিনীর যৌথ অভিযানে দুর্ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত এবং ৫০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে কয়েকজনের পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি, কারণ আগুনে তাদের দেহ মারাত্মকভাবে পুড়ে গেছে।
Comments