
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিনকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামি মো. মোবারক হোসেন (কবিরাজ) আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তিনি ধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আরিফুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ সেপ্টেম্বর সকালে কুমিল্লার কালিয়াজুরি এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিনা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় মোবারক হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রোববার আদালতে তাকে তোলা হলে জবানবন্দিতে মোবারক স্বীকার করেন, তিনি সুমাইয়াকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছেন। এছাড়া, ঘটনা প্রত্যক্ষ করায় সুমাইয়ার মাকেও হত্যা করেন তিনি।
পুলিশের মিডিয়া শাখার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সুমাইয়ার পরিবার তাকে ‘জিনে ধরার’ চিকিৎসার জন্য বাবুস সালাম জমিরিয়া মাদ্রাসার পীর ইলিয়াস শাহের কাছে ঝাড়ফুঁক করাতে নিয়ে যেত। সেখানে মোবারকের সাথে তাদের পরিচয় হয়। মোবারক ঝাড়ফুঁকের নামে তাদের বাসায় যাতায়াত করতেন। ঘটনার দিন তিনি সুমাইয়াকে ধর্ষণ করেন। এই ঘটনা সুমাইয়ার মা দেখে ফেলায় তাকেও হত্যা করা হয়। পরে সুমাইয়া বাধা দিলে তাকেও হত্যা করেন মোবারক।
এদিকে, মোবারকের বিরুদ্ধে পূর্বেও ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে। ২০২৩ সালের ২৪ জুন কুমিল্লা নগরীর ধর্মপুর পশ্চিম চৌমুহনীতে হজরত খাদিজাতুল কোবরা মহিলা মাদ্রাসা ও এতিমখানায় সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী মোহনা আক্তার মুন্নীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম জানান, “আসামি ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া কাপড়, বিছানার চাদরসহ অন্যান্য আলামত পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর বিষয়টি আরও নিশ্চিত হওয়া যাবে।”
এ ঘটনায় কুমিল্লায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ বলছে, তদন্ত চলমান রয়েছে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে।
Comments