গফরগাঁওয়ে যুবদল নেতার বিল দখলের চেষ্টা, পুলিশের সামনে ৬ জনকে কুপিয়ে জখম

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার স্বল্পছাপিলা গ্রামে উরপাথর বিল দখলের চেষ্টার সময় স্থানীয়দের বাধার মুখে যুবদল নেতা সালেহ আকরাম তছলিমের নেতৃত্বে তার বাহিনী ৬ জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করেছে। ঘটনাটি শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে টাংগাব ইউনিয়নের উক্ত গ্রামে সংঘটিত হয়। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলের কাছাকাছি উপস্থিত থাকলেও কোনো বাধা দেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরও উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সালেহ আকরাম তছলিম উরপাথর বিল দখলের চেষ্টা করেছিলেন। তখন স্থানীয় বিল মালিকদের বাধার মুখে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয় এবং বেশ কয়েকজন আহত হন। শনিবার আবারও তিনি দলবল নিয়ে বিল দখলের চেষ্টা করলে স্থানীয়রা প্রতিরোধ করেন। এ সময় তছলিম ও তার বাহিনী স্থানীয় ৬ জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে।
আহতরা হলেন— স্বল্পছাপিলা গ্রামের সারোয়ার হোসেন (৩৫), মঙ্গন খান (২৫), তুষার (২৫), রুবেল (৩৭), আতাউর রহমান খান (৬৪) এবং আরেকজন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত সারোয়ার হোসেনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর মুমূর্ষু অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বাকিদের গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও জুলাই যোদ্ধা মইন খান বলেন, “আমরা আমাদের নিজস্ব জমিতে উরপাথর বিলে মাছ চাষ করছি। তছলিম ও তার বাহিনী বারবার চাঁদাবাজি ও দখলের চেষ্টা করেছে। শনিবার তারা আবারও দখলের জন্য এসে আমাদের ৬ জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করেছে।”
বিলের মালিকদের পক্ষে তুষার খান অভিযোগ করেন, “তছলিম এলাকায় নিজস্ব বাহিনী দিয়ে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির রাজত্ব কায়েম করেছে। মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে তার অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। হামলার সময় পুলিশ ঘটনাস্থলের কাছে থাকলেও কোনো বাধা দেয়নি।”
অভিযুক্ত যুবদল নেতা সালেহ আকরাম তছলিম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি বিল দখল বা মারামারির সঙ্গে জড়িত নই।”
এ বিষয়ে পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফেরদৌস আলমের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি পুলিশের নিরব থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে ভিডিও ফুটেজে পুলিশের নির্বিকার ভূমিকা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দেন।
এলাকাবাসী জানান, তছলিমের নেতৃত্বে চলমান সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির কারণে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
Comments