Image description

চট্টগ্রাম নগরীর শীতল ঝরনা খালের ওপর ভেঙে দুই ভাগ হয়ে পড়া সেতুর জায়গায় নতুন সেতু নির্মাণে চলতি সপ্তাহেই দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। ৮ থেকে ৯ কোটি টাকা ব্যয় ধরে আসছে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে নতুন সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থাটির।

গেলো বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টায় ভারী বর্ষণের সময় নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী সড়কের স্টারশিপ গলির মুখে ভেঙে যায় একটি সেতুর এক পাশ। শীতল ঝরনা খালের ওপর অবস্থিত এই সেতুর আরেক পাশ দিয়ে যান চলাচল করছে। তবে সেতুর এই পাশটিও ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানান সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলীরা।

এই সেতু দিয়ে নগরীর ২ নম্বর গেট থেকে অক্সিজেন যাতায়াত করেন লোকজন। নগরীর ২ নম্বর গেট থেকে অক্সিজেনমুখী সড়কের ওপর থাকা সেতুর অংশ ভেঙে যায়। বর্তমানে অক্সিজেন থেকে ২ নম্বর গেটমুখী অংশ চালু আছে।

রবিবার (১০ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, ভেঙে যাওয়া সেতুর এক পাশে টিনের ঘেরাও দেওয়া হয়েছে। সেতুটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে এবং ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সতর্কতামূলক ব্যানার টানানো হয়েছে। এ ছাড়া খননযন্ত্র দিয়ে সেতুর উপকরণগুলো সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলীরা জানান, নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী সড়ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম সড়ক। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ হাজার গাড়ি চলাচল করে। ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটির এক পাশ ভেঙে গেছে। আরেক পাশও ধসে পড়তে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেতুটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণের আগেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এখন এই প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত হয়েছে। ঠিকাদার নিয়োগের জন্য আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।

সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতায় বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় শীতল ঝরনা খালের ওপর নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে সেতুর নকশা চূড়ান্ত করা হয়েছে। ব্যয়ও ঠিক করা হয়েছে। যার পরিমাণ ৮ থেকে ৯ কোটি টাকা। নতুন সেতুর প্রশস্ততা হবে ২৩ মিটার। এর দৈর্ঘ্য ১৫ মিটার। আগে দৈর্ঘ্য ছিল ছয় মিটার।

সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক জসীম উদ্দিন বলেন, গুরুত্ব বিবেচনায় শীতল ঝরনা খালের ওপর নতুন সেতু নির্মাণে বিশেষভাবে উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা। এ জন্য দ্রুত দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এরপর নির্মাণকাজ শুরু হবে। নতুন সেতু নির্মাণ করতে অন্তত এক থেকে দেড় বছর সময় লাগবে। তবে চেষ্টা করবেন আরও আগে কাজ শেষ করার জন্য।

প্রকল্প পরিচালক জানান, সেতুটির দুই পাশের নির্মাণকাজ একসঙ্গে করা যাবে না। প্রথমে ভেঙে যাওয়া অংশে কাজ করা হবে। এরপর পাশের অংশে কাজ করবেন তাঁরা। সিটি করপোরেশনের দায়িত্বশীল এক প্রকৌশলী প্রথম আলোকে বলেন, সেতুর দরপত্রপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে অন্তত দেড় মাস সময় লাগবে। এরপর ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হবে। তাই নির্মাণকাজ শুরু করতে দেড় থেকে দুই মাস সময় লাগবে।

চট্টগ্রাম নগর থেকে উত্তর চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটিতে যাতায়াত করতে বায়েজিদ বোস্তামী সড়ক ব্যবহার করেন লোকজন। আবার এই সড়কের দুই পাশে রয়েছে পোশাক কারখানা, ইস্পাত কারখানাসহ বিভিন্ন ধরনের শিল্পপ্রতিষ্ঠান। আছে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ এবং ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল এন্ড কলেজের মতো খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। ফলে এই সড়কের গুরুত্ব অনেক বেশি।