Image description

চট্টগ্রামের রাউজানে ১৬০ বছরের পুরোনো একটি পুকুর ভরাটের অভিযোগে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ পাঁচজনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। রোববার (১০ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাহমুদুল হক এই পাঁচ আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়ের করা মামলার শুনানিতে জামিনের আবেদন নিয়ে আদালতে হাজির হলে তাদের এই শাস্তি দেওয়া হয়।

আটককৃতরা হলেন—নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মুহাম্মদ খোরশেদুল ইসলাম (৫০), পূর্ব কচুখাইন গ্রামের মুহাম্মদ জাহেদুল ইসলাম (৪৮), আলী আকবর (৬০), মকবল আহমদ (৫৫) এবং মুহাম্মদ খোরশেদ (৫২)। এই ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা, পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের গবেষণা কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন, রোববার দুপুর ২টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নোয়াপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব কচুখাইন মুহাম্মদীয়া দরবার শরীফ সংলগ্ন এই পুকুরটি ২০২১ সাল থেকে ভরাটের কাজ শুরু করেন অভিযুক্তরা। স্থানীয়দের বাধার মুখে তখন কাজ বন্ধ হয়। কিন্তু ২০২৩ সালের শুরুতে পুনরায় কর্ণফুলী নদী থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে পাইপলাইন ব্যবহার করে পুকুরটি ভরাট শুরু করা হয়। এর বিরুদ্ধে এলাকাবাসী পরিবেশ অধিদপ্তরে অভিযোগ দায়ের করলে তদন্তে নেমে উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর সত্যতা পায়। ওই সময় আকবর হোসেন নামে একজনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

তবে অভিযুক্তরা জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে পুকুরটি পুরোপুরি ভরাট করে ফেলেন। তারা দাবি করেছিলেন, মালিকদের সম্মতিতে সামাজিক কবরস্থান নির্মাণের জন্য পুকুরটি ভরাট করা হয়েছিল। এরপর ২০২৩ সালের ৩১ মে পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারী পরিচালক আফজারুল ইসলাম বাদী হয়ে পরিবেশ আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

মুহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন বলেন, “রোববার দুপুরে পুকুর ভরাটের মামলায় অভিযুক্তরা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু আদালত তাদের জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।”

এ ঘটনায় এলাকাবাসী পরিবেশ আইন লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্তদের শাস্তির প্রশংসা করলেও পুকুরটি পুনরুদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, এই ঐতিহ্যবাহী পুকুরটি এলাকার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত।