Image description

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা কেন্দ্রের নতুন পরিচালক হিসেবে প্রফেসর ড. মো. সুজাহাঙ্গীর কবির সরকারের নিয়োগকে কেন্দ্র করে বিতর্ক ও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। নিয়োগের পর থেকে গত সাত দিন ধরে পরিচালকের কক্ষ তালাবদ্ধ রেখেছেন সহযোগী অধ্যাপক এবিএম সাইফুল ইসলাম, যিনি এই কেন্দ্রের উপ-পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মধ্যে অসন্তোষ ও জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।

গত ৪ আগস্ট রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে প্রফেসর ড. মো. সুজাহাঙ্গীর কবির সরকারকে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা কেন্দ্রের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু এই নিয়োগের বিরোধিতা করে পদত্যাগ করেন একই কেন্দ্রের উপ-পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক এবিএম সাইফুল ইসলাম। তিনি অভিযোগ করেন, এই নিয়োগের মাধ্যমে তাকে অসম্মান করা হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে জামায়াতিকরণের প্রচেষ্টা চলছে।

প্রফেসর সুজাহাঙ্গীর কবির সরকার নিয়োগ পাওয়ার পর তার কক্ষে প্রবেশ করতে গেলে জানা যায়, সহযোগী অধ্যাপক এবিএম সাইফুল ইসলাম আগেই কক্ষটি তালাবদ্ধ করে রেখেছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, তিনি কক্ষের তালা পরিবর্তন করে নিজের ব্যক্তিগত তালা লাগিয়েছেন। গত ৯ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের মাধ্যমে এবিএম সাইফুলের পদত্যাগ ও তালাবদ্ধ করার ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদপত্র জমা দেওয়া হয়। এ ঘটনার সমাধানে একটি নির্দেশক কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির কাছে ১০ আগস্ট (রবিবার) কক্ষের চাবি হস্তান্তরের কথা থাকলেও প্রফেসর সুজাহাঙ্গীর এখনো কক্ষ বুঝে পাননি।

প্রফেসর ড. মো. সুজাহাঙ্গীর কবির সরকার বলেন, “আমাকে ১০ আগস্ট কক্ষ বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু এখনো তা হয়নি। আমি আমার দায়িত্ব পালনে বাধা পাচ্ছি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।”

অন্যদিকে, সহযোগী অধ্যাপক এবিএম সাইফুল ইসলাম তালা লাগানোর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি উপ-পরিচালক হিসেবে দায়িত্বে ছিলাম। কক্ষের কোনো জিনিসপত্র যেন হারিয়ে না যায়, সেজন্য চাবি নিজের কাছে রেখেছি।” তবে তদন্তে জানা গেছে, তিনি কক্ষের মূল তালা পরিবর্তন করে নিজের তালা ব্যবহার করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, “এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা দ্রুত এই জটিলতার মীমাংসা করে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা কেন্দ্রের পরিচালকের কক্ষ খুলে দেবে। আমরা এই পরিস্থিতি দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি।”

এ ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা ও অসন্তোষের সৃষ্টি করেছে। সংশ্লিষ্টরা দ্রুত এই সমস্যার সমাধানের দাবি জানিয়েছেন, যাতে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা কেন্দ্রের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে।