
ইউক্রেন সংঘাত নিরসনে যুদ্ধবিরতির চেয়ে দেশটির দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে জোর দিচ্ছে ইউরোপীয় দেশগুলো। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে কিয়েভের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চয়তার প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর ইউরোপীয় মিত্ররা আশাবাদী হলেও, এই পথের অনেক দিক এখনো অস্পষ্ট।
গত সোমবার (১৮ আগস্ট) হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। যদিও ট্রাম্পের সঙ্গে গত ফেব্রুয়ারির বৈঠকের তুলনায় এবারের পরিবেশ অনেক উষ্ণ ছিল। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদী শান্তির পথ এখনও অনিশ্চিত।
সাবেক ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা কূটনীতিক জন ফোরম্যানের মতে, এই বৈঠকের ইতিবাচক দিক হলো ট্রাম্প ইউক্রেনকে আত্মসমর্পণ বা সামরিক সহায়তা বাতিলের ঘোষণা দেননি। তবে নিরাপত্তা নিশ্চয়তার সুনির্দিষ্ট রূপরেখা কী হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ওয়াদেফুল বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখন দরজা খুলে দিয়েছেন। এখন পুতিনকে আলোচনার টেবিলে আসতেই হবে। অন্যথায় নিষেধাজ্ঞা আরও বাড়াতে হবে। তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চয়তা বিষয়ে ইউক্রেনের মিত্ররা দ্রুত সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব তৈরির কাজ করছে।
এদিকে জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তার কর্মকর্তারা নিরাপত্তা নিশ্চয়তার খসড়া নিয়ে কাজ করছেন। তবে পুতিনের পক্ষ থেকে এখনো বৈঠকের কোনো নিশ্চয়তা আসেনি।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, মস্কো কোনো আলোচনার ফরম্যাটকে প্রত্যাখ্যান না করলেও জাতীয় নেতাদের যেকোনো বৈঠক 'সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রস্তুত করতে হবে'।
যদিও পুতিন আগেই স্পষ্ট করেছেন যে, ইউক্রেনের মাটিতে ন্যাটোর সেনা মোতায়েন রাশিয়া মেনে নেবে না। তিনি আরও বলেন, অধিকৃত ভূখণ্ড থেকে সরে আসারও কোনো সম্ভাবনা নেই। ট্রাম্প এখনো নিরাপত্তা নিশ্চয়তা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলেননি, তবে তিনি ইউক্রেনকে ক্রিমিয়া ফেরত পাওয়া বা ন্যাটো সদস্যপদ লাভের আশা ভুলে যেতে বলেছেন।
ইউরোপীয় দেশগুলোর জন্য ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা অনেকটা শুল্ক ইস্যুতে অতীতের দ্বন্দ্বের মতো হয়েছে বলে মনে করেন ম্যাথিয়াস ম্যাথিজ। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি এড়ানো গেলেও ফলাফল সব সময় আগের চেয়ে খারাপ থাকে।
ইউরোইন্টেলিজেন্সের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এখানে শুধু রাশিয়া কী মেনে নেবে তা নয় বরং পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনের জন্য কতটা করতে পারবে এবং করতে চাইবে, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন।
Comments