Image description

পটুয়াখালীতে একের পর এক ডাকাতির ঘটনায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন জেলার গ্রামীণ জনগণ। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা লুটের পাশাপাশি ঘটছে নারী নির্যাতনের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনাও।

গত ১৩ জুলাই কলাপাড়ার টিয়াখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ বাদুরতলীতে সংঘটিত হয় ভয়াবহ এক ডাকাতি। ওই রাতে বাড়ির সবাইকে হাত-পা বেঁধে রেখে নববধুকে পাশের কক্ষে নিয়ে গণধর্ষণ করে ডাকাতদল। তারা লুটে নেয় প্রায় ১৩ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ।

এরপর ২১ আগস্ট রাতে কলাপাড়ার নীলগঞ্জে স্বর্ণ ব্যবসায়ী নিখিল কর্মকারের বাড়িতে আরেকটি দুঃসাহসিক ডাকাতি ঘটে। জানালার গ্রিল কেটে ঘরে ঢুকে ডাকাতরা পরিবারের সদস্যদের মারধর ও বেঁধে ফেলে। রিভলবার ঠেকিয়ে লুটে নেয় ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থ।

এর মাত্র দুদিন পর ২৩ আগস্ট রাতে পাশের লতাচাপলী ইউনিয়নের আলিপুর গ্রামে এক রাতে তিনটি বাড়িতে ডাকাতি হয়। একই রাতে গলাচিপা পৌর শহরের এক সংখ্যালঘু ব্যবসায়ীর বাড়িতেও স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা লুট হয়।

অন্যদিকে, বাউফলের কাশিপুরে ডাকাতির পর পালাতে গিয়ে গণপিটুনিতে নিহত হন একজন, গুরুতর আহত হন আরেকজন। আর চলতি বছরের জানুয়ারিতে কলাপাড়ার নীলগঞ্জে ডাকাতির সময় অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আবুল কালামের স্ত্রী শাহনাজ বেগমকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, প্রায়ই ডাকাতি হচ্ছে। রাতে ঘুমাতে ভয় লাগে। পুলিশের টহল থাকলেও ডাকাতি থামছে না।

পুলিশ জানায়, নববধু ধর্ষণসহ একাধিক ডাকাতির ঘটনায় জড়িত কয়েকটি চক্রের সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে জোরদার করা হয়েছে টহল।

পটুয়াখালী জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সমীর সরকার বলেন, ‘ডাকাতির ঘটনায় আমাদের একাধিক অভিযান চলছে। বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে মাঠে কাজ করছে পুলিশ।’

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে জেলায় ডাকাতির ঘটনায় মামলা হয়েছে ২০টি। এর মধ্যে শুধু জুলাই-আগস্ট মাসেই মামলা হয়েছে ৮টি। এ সময় গ্রেফতার হয়েছে ৪২ জন। তবে পুলিশের পরিসংখ্যানের বাইরে আরও অনেক ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগীরা ভয়ে কিংবা বিচারহীনতার আশঙ্কায় মামলা করতে সাহস পাচ্ছেন না।