Image description

দীর্ঘ ১৭ বছরের অপেক্ষার পর আবারও নিজ জন্মভূমি কেশবপুরে ফিরছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর শনিবার তার এই সফরকে কেন্দ্র করে কেশবপুরে এখন এক ধরনের রাজনৈতিক জাগরণ দেখা দিয়েছে। উপজেলা জুড়ে চলছে ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার সাঁটানোর ব্যস্ততা, চলছে সমর্থকদের আনাগোনা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, শ্রাবণের এই প্রত্যাবর্তন শুধু একটি সৌজন্য সফর নয়; এটি হতে পারে কেশবপুরে নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা। স্থানীয় বিএনপির রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে স্থবিরতা ও বিভক্তি দেখা গেলেও শ্রাবণের আগমন সেই বিভক্তিকে একীভূত করার সুযোগ তৈরি করতে পারে।

রাজনীতিতে শ্রাবণের যাত্রা : 
কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ ছাত্রজীবনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বে উঠে আসেন তিনি তার সাংগঠনিক দক্ষতা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও ত্যাগের মাধ্যমে। ছাত্রদলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি ছিলেন সাহসী ও কৌশলী নেতা। তার নেতৃত্বে ছাত্রদল মাঠের রাজনীতিতে দৃঢ় অবস্থান তৈরি করেছিল। রাজনৈতিক জীবনে পরি”ছন্ন ভাবমূর্তি এবং কর্মীদের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্কই তাকে কেশবপুরের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে পরিণত করেছে।

উপজেলায় প্রস্তুতির ঝলক : শ্রাবণের সফর উপলক্ষে কেশবপুর জুড়ে এখন উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। উপজেলা ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপির নেতাকর্মীরা ইতিমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন। জানা গেছে, তার গণসংবর্ধনা উপলক্ষে একশতাধিক মাইক্রোবাস ও এক হাজারের বেশি মোটরসাইকেলের বহর প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পৌর শহর থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত রঙিন ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে কেশবপুর। চায়ের দোকান, বাজার, সামাজিক আড্ডাসব জায়গায় এখন আলোচনার মূল বিষয় কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের সফর।

দলীয় নেতাদের প্রত্যাশা : 
কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মোঃ মশিয়ার রহমান বলেন, আমি ১৯৭৮ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাতে হাত রেখে বিএনপিতে যোগ দিই। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছি। বর্তমানে উপজেলা বিএনপিতে কিছু বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে। দলকে সুসংগঠিত করতে হলে শ্রাবণের মতো পরীক্ষিত ও ক্লিন ইমেজের নেতার প্রয়োজন। 

স্থানীয় নেতারা বলছেন, শ্রাবণ যদি উপজেলা বিএনপিকে পুনর্গঠন ও ঐক্যবদ্ধ করার উদ্যোগ নেন, তবে ভবিষ্যৎ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেশবপুর আসনটি আবারও বিএনপির দখলে আসতে পারে।

রাজনৈতিক বিম্লেষণ : রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শ্রাবণের প্রত্যাবর্তন কেবল কেশবপুর নয়, যশোর জেলার বিএনপির রাজনীতিতেও নতুন প্রাণ সঞ্চার করতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে যশোরে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম মন্থর গতিতে চলছিল। শ্রাবণের মতো তরুণ, শিক্ষিত ও রাজনৈতিকভাবে পরিশীলিত নেতার সক্রিয় উপস্থিতি দলের সাংগঠনিক কাঠামোকে আবারও সচল করতে পারে। রাজনৈতিক মহলের মতে, তার এই সফর আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপির তৃণমূল সংগঠনের পুনর্গঠন ও গণসংযোগ কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করবে।

জনমনে প্রত্যাশা : স্থানীয় সাধারণ মানুষও শ্রাবণের সফর নিয়ে উৎসুক। অনেকে মনে করছেন, তিনি যদি সক্রিয়ভাবে মাঠে নামেন, তাহলে এলাকায় উন্নয়নমূলক উদ্যোগ বাড়বে, তরুণদের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে। 

চায়ের দোকানে আড্ডায় এক বয়োজ্যেষ্ঠ ভোটার বললেন, আমরা অনেক দিন পর আমাদের নেতাকে সামনে দেখব। আশা করি, তিনি এলাকায় এসে জনগণের সমস্যার কথা শুনবেন এবং কেশবপুরের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবেন। দৃষ্টি এখন কেশবপুরে : এখন সবার চোখ ২০ সেপ্টেম্বরের দিকে। শ্রাবণ কী বার্তা দেন, কেমন জনসমর্থন পান এবং স্থানীয় রাজনৈতিক সমীকরণে কী পরিবর্তন আসে তা দেখার জন্য কেশবপুরের পাশাপাশি যশোর জেলার রাজনীতিবিদ ও সাধারণ মানুষও অপেক্ষায়।