Image description

জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়ন নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে রাজনৈতিক দল, জোট এবং বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন মতামত ও সুপারিশ পেশ করেছেন। বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ২৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে এই তথ্যগুলো জানানো হয়।

সংবিধান সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো যেসব সুপারিশ দিয়েছে, সেগুলো হলো:

গণভোট: পূর্ণাঙ্গ সনদ বা এর কিছু অংশ নিয়ে গণভোটের আয়োজন করা।

রাষ্ট্রপতির বিশেষ আদেশ: রাষ্ট্রপতির নির্বাহী ক্ষমতার অধীনে বিশেষ সাংবিধানিক আদেশে সনদটি বাস্তবায়ন করা।

গণপরিষদ গঠন: নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গণপরিষদ গঠন করে প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক ব্যবস্থা নেওয়া।

সংসদ দ্বারা বাস্তবায়ন: ত্রয়োদশ সংসদে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা এই সনদ বাস্তবায়ন করবেন।

সংসদকে সংস্কার সভা: সংসদকে সংবিধান সংস্কার সভারূপে প্রতিষ্ঠিত করে সনদের বিষয়গুলো সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা।

সুপ্রিম কোর্টের মতামত: সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কাছে এই মর্মে মতামত চাওয়া যে, অন্তর্বর্তী সরকার এই সনদ বাস্তবায়ন করতে পারবে কিনা।

বিশেষজ্ঞ ও আইন বিশেষজ্ঞদের মতামত

বিশেষজ্ঞ প্যানেল প্রাথমিকভাবে পাঁচটি পদ্ধতি সুপারিশ করলেও, পরে বিস্তারিত আলোচনার পর চারটি পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছে। এগুলো হলো: অধ্যাদেশ, নির্বাহী আদেশ, গণভোট এবং বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ।

আইন বিশেষজ্ঞদের প্যানেল জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে যেসব পরামর্শ দিয়েছেন, সেগুলো হলো:

সাংবিধানিক আদেশ জারি: অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই ঘোষণার ২২ অনুচ্ছেদের অধীনে একটি সংবিধান আদেশ জারি করতে পারে, যাতে সনদের মূল সংস্কারগুলো অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

গণভোটে অন্তর্ভুক্তি: এই সংবিধান আদেশকে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের সময় গণভোটে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

জনগণের সম্মতি: গণভোটের মাধ্যমে জনগণের সম্মতি পেলে সংবিধান আদেশটি কার্যকর হবে।

গত ১১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে দুটি বিষয়ে সবার মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে:

১.  অ-সাংবিধানিক বিষয়: সনদের যেসব বিষয় সংবিধান সংশ্লিষ্ট নয়, সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশ জারি করতে পারে। ইতোমধ্যে কিছু বিষয়ে অধ্যাদেশ জারি ও বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে।

২.  প্রশাসনিক বিষয়: যেসব সুপারিশ সরকারি বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আদেশ ও বিধি প্রণয়নের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা সম্ভব, সেগুলো অন্তর্বর্তী সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন করতে পারে। এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আইন উপদেষ্টাকে অনুরোধ করা হয়েছে।