
দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানে তোড়জোড় শুরু করেছেন নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি। তিনি দাবি করেছেন, ছয় মাসের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করে ক্ষমতা ছাড়তে চান তিনি। এ জন্য সুশীলা দিনে ১৮ ঘণ্টা কাজ করবেন। বিবিসি নেপালিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সুশীলা ওই সব কথা বলেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর এটিই ছিল তার প্রথম সাক্ষাৎকার।
এক প্রশ্নের জবাবে সুশীলা বলেন, ‘আপনি জানেন যে সাধারণ মানুষের দিক থেকে কতটা চাপের মুখে এই সরকার গঠিত হয়েছে। আমি আমার দায়িত্ব ছয় মাসের মধ্যে শেষ করে পদ থেকে সরে যেতে চাই। আগামী কয়েক দিনে নির্বাচন কমিশনকে সক্রিয় করে তুলব আমরা। প্রথমত ভোটার তালিকা প্রস্তুত করতে হবে তাদের। একটা পুরোনো ভোটার তালিকা আছে তাদের; কিন্তু সেটা হালনাগাদ করতে হবে। যদি দিনরাত কাজ করতে পারি তাহলে ছয় মাসে সেটা করা সম্ভব। আমি তো বলেইছি যে, আমি দিনে ১৮ ঘণ্টা কাজ করব। যেদিন আমি ক্ষমতা হস্তান্তর করে দেব, সেদিন থেকে আমি মুক্ত।
ঘোষণা অনুযায়ী, ২০২৬ সালের ৫ মার্চ নেপালে নির্বাচন হবে। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে যা যা করা প্রয়োজন তার সবই করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সুশীলা। এ সময়ের মধ্যে তিনি বিগত সরকারের দুর্নীতির বিচারও করতে আগ্রহী।
তিনি বলেন, কী আকারে দুর্নীতি হয়েছে, সেটা আগে জানা প্রয়োজন। আমরা যদি তদন্ত শুরু করতে পারি, পরবর্তী সরকারও সেই কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে পার। আমাদের মনে হয় দুর্নীতির বিরুদ্ধে যতক্ষণ না তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, ততদিন পর্যন্ত এই জাতি শান্তি পাবে না। আমরা নিশ্চিতভাবেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত করব।
জেন-জি বিক্ষোভে সহিংসতার তদন্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমান মন্ত্রীসভায় আমরা মাত্র চারজন সদস্য আছি। আমাদের হাতে সময় রয়েছে ছয় মাস। এই ছয়টি মাসকে আমরা যতটা সম্ভব কাজে লাগাতে চাই। আমাদের পরিকল্পনা হলো ওই তদন্ত এক মাসের মধ্যে শেষ করার, বা বড়জোড় দেড় মাস। বিভিন্ন ক্ষেত্রের তিনজন বিশেষজ্ঞকে দিয়ে এই তদন্ত চালানো হবে।
এসব কারণে দেশের গুরুত্বপূর্ণ কাজ এগিয়ে নিতেই মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ করতে চান সুশীলা। তবে এ নিয়ে দেশটিতে নতুন করে অসন্তোষ দানা বাঁধছে। আন্দোলনকারীদের একটি অংশই সুশীলা কার্কির বিরোধিতা করছেন। বিক্ষোভকারীরা বলছেন, সুশীলা প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় তাদের নতুন নেপালের স্বপ্ন ভেস্তে গেছে। এর জবাবে সুশীলা বলেন, হয়তো আমরা সব দাবি পূরণ করতে পারব না; কিন্তু আমরা সর্বতোভাবে চেষ্টা করব।
Comments