বিদ্যালয়ের ল্যাব অপারেটরকে পেটালেন ইউপি সদস্য, নিরাপত্তাকর্মী গ্রেপ্তার

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার রতনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর মোঃ সাইদার রহমানের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে দাবি করা দুই লাখ টাকা না পেয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে প্রকাশ্যে বেধড়ক মারপিটের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
এসময় আহাত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে দেন সহকর্মীরা। সোমবার সকাল ১০ টার দিকে রতনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
এঘটনায় আহত সাইদারের স্ত্রী সাবিয়া সুলতানা বাদি হয়ে ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে রাকিবুলকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় ইউপি সদস্যের ছেলে ওই বিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মীর দায়িত্বে থাকে রাকিবুলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.মইনুল ইসলাম।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পুলিশ সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন আগের ঘটনা। রতনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর সাইদার রহমানের মুঠোফোনে একটি নম্বর থেকে ফোন দিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুলের নাম ভাঙ্গিয়ে দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করা হয়। সেই বিষয়টি নিয়ে (১১ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্ন, বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক উভয় পক্ষকে নিয়ে বিদ্যালয়ে একটি বৈঠকও বসেন। বৈঠকে সাইদার কর্তৃক ইউপি সদস্যদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিষয়ে জোড়ালো কোন প্রমান দিতে না পারায় ওই বৈঠকেই ইউপি সদস্য তাঁর মানহানির হয়েছে মর্মে লিখিত অভিযোগ করেন এবং সেটি নিয়ে রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বৈঠক বসার কথা ছিলো। কিন্তু রোববার কোন কারণে বৈঠক না হওয়াই সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ১১টায় পূণরায় বৈঠকে বসার কথা থাকলেও সকাল সাড়ে ১০ টায় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম, তার ছেলে, ভাগিনা সহ আরেক জন বহিরাগতকে নিয়ে মারমুখী হয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে তাঁরা সাইদার খুঁজতে থাকে। এক পর্যায়ে সাইদারকে কম্পিউটার ল্যাব কক্ষে পেয়ে এ্যালোপাথারী মারপিট করতে থাকে। এসময় প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষকরা এগিয়ে আসলে ইউপি সদস্য শফিকুল প্রধান শিক্ষক ও সাইদারকে হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর সাইদার রহমান বলেন, আমি ২৩ সালে যোগদানের পর থেকে শফিকুল ইসলাম নানা অযুহাতে আমার কাছে দুই লক্ষ টাকা দাবি করেন। আমি টাকা না দিলে আজকে বিদ্যালয়ে ঢুকে অফিস কক্ষে আমাকে প্রকাশ্যে লোহার রড ও লাঠি দ্বারা মারপিট করে। আমি আহত হলে সহকর্মীরা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আমি এঘটনার সুষ্ঠ বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
মারপিটের ঘটনায় বাগজানা ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, সেখানে কোন মারামারির ঘটনা ঘটেনি। একটু ধাক্কাধাক্কির হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলে এলাহী মন্ডল বলেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম স্কুল কক্ষে প্রবেশ করে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর সাইদারের উপর অর্তকিত হামলা করে। এতে আমরা শিক্ষক কর্মচারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক সুষ্ঠ বিচারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ জানাচ্ছি।
ওসি জানান, এঘটনায় খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আহতের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
Comments