সুন্দরগঞ্জে বিদ্যালয়ের মাঠে ধান চাষ, খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বিদ্যালয়ের মাঠে ধান চাষ করা হচ্ছে, ফলে খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামদেব দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে।
বিদ্যালয় সূত্র জানায়, ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি বর্তমানে প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থীর পাঠদানে নিয়োজিত। তবে বিদ্যালয়ের সাড়ে তিন বিঘা জমির মাঠ দীর্ঘদিন ধরে বর্গা দেওয়া হয়েছে। কে বা কারা এই বর্গার সঙ্গে যুক্ত এবং বিনিময়ে কী সুবিধা দেওয়া হয়েছে, তা কেউ বলতে পারেনি।
সরেজমিনে গতকাল বৃহস্পতিবার দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের মাঠজুড়ে ধানের চাষ। মাঠ না থাকায় শিক্ষার্থীদের বারান্দা আর শ্রেণিকক্ষের সামান্য জায়গায় ছোটাছুটি করতে হচ্ছে। আর শিক্ষকরা নিজেদের মধ্যে কক্ষে বসে থাকলেও প্রধান শিক্ষকের কক্ষ ছিল তালাবদ্ধ।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে জানায়, মাঠে ধান ও ঘাস চাষ করে প্রধান শিক্ষক বছরে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। একই সঙ্গে মসজিদ নির্মাণের নামে শ্রেণিভেদে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা তুললেও সেই টাকা আত্মসাৎ হয়েছে।
৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহানাজ, লামিয়া ও শেফালী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের খেলার মাঠ দখল করা হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই সামনে পানি জমে যায়, তখন আমাদের ক্লাসেই বসে থাকতে হয়।”
এলাকাবাসীও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন। প্রাক্তন ছাত্র মেহেদী নাজমুল হুদা জানান, বহুবার অভিযোগ ও মানববন্ধন করেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় আউয়াল মিয়া ও মহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক ক্ষমতার দাপটে বিদ্যালয়ের পাশের ডাকঘর উচ্ছেদ করেছেন, ফলে এলাকাবাসী ভোগান্তিতে পড়েছে।
সহকারী প্রধান শিক্ষক বদিয়ার রহমান বলেন, “আমি আসার পর থেকেই মাঠে ধান চাষ হচ্ছে। বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটি ও প্রধান শিক্ষক অবগত।”
তবে প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বসুনিয়া দায়িত্ব এড়িয়ে গিয়ে বলেন, “আমার আগের প্রধান শিক্ষক মাঠের জমি বন্ধক রেখেছিলেন। এখনো সেই অবস্থায় আছে। টাকা জোগাড় হলে মাঠ ছাড়িয়ে আনা হবে।”
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ২০০৯ সাল থেকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বে থাকলেও এতদিন কেন ব্যবস্থা নেননি তিনি?
এদিকে উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার বেলাল হোসেন বলেন, “এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Comments