
উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল সংলগ্ন এলাকায় বিমান দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবার ও স্বজনরা মঙ্গলবার মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, দায়ীদের বিচার এবং নিহত ও আহতদের জন্য ক্ষতিপূরণসহ আট দফা দাবি তুলে ধরেছেন।
দুর্ঘটনায় নিহত ফাতেমার মামা লিয়ন মীর পরিবারের পক্ষ থেকে আটটি দাবি উত্থাপন করেছেন:
১. দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার: ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা।
২. ক্ষতিপূরণ: সরকারের পক্ষ থেকে নিহত প্রতিটি শিক্ষার্থীর পরিবারকে ৫ কোটি টাকা এবং আহতদের ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া। একই সঙ্গে, স্কুলের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে ২ কোটি টাকা এবং আহতদের ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া।
৩. কোচিং বাণিজ্য বন্ধ: সারা দেশে মাইলস্টোন স্কুলসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করা।
৪. প্রধান শিক্ষিকার অপসারণ: কোচিং ব্যবসার মূল হোতা হিসেবে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকা খাদিজাকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ এবং তার বিচার নিশ্চিত করা।
৫. স্থানান্তর: রানওয়ে থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নেওয়া অথবা রানওয়ের অবস্থান পরিবর্তন করা।
৬. সিসি ক্যামেরার ফুটেজ: স্কুলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরিবারের কাছে প্রদর্শন করা।
৭. বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ: বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা জনবসতিহীন এলাকায় সরিয়ে নেওয়া।
৮. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা: দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
অন্যদিকে, স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল নুরুন নবী কোচিং বাণিজ্য নিয়ে অভিভাবকদের অভিযোগের বিষয়ে বলেছেন যে তারা শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়ম মেনেই অতিরিক্ত ক্লাস পরিচালনা করেন। তিনি জানান, এই মর্মান্তিক ঘটনার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের জন্য কাউন্সেলিং এবং শোক সভাসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই দুপুরে উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের কাছে একটি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজিআই মডেলের যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এই ঘটনায় বিমানের পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলামসহ মোট ৩৪ জন নিহত হন, যার মধ্যে ২৭ জন ছিলেন মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষার্থী। এছাড়া, বেশ কিছু শিক্ষার্থী এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
অভিভাবকরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, দ্রুত তাদের দাবি পূরণ না হলে তারা আরও বড় ধরনের আন্দোলনে যাবেন।
Comments