
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে সাদা পাথর লুটের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। সমালোচনা ও মিডিয়া প্রতিবেদন সত্ত্বেও রাতের অন্ধকারে শত শত ট্রাকে সাদা পাথর সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এক সময়ের জনপ্রিয় পর্যটন স্পট সাদা পাথর এখন বিরাণভূমিতে পরিণত হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাদা পাথরের বর্তমান অবস্থার ছবি ভাইরাল হওয়ার পর দেশজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন জাতীয় সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু এসব তোয়াক্কা না করেই লুট অব্যাহত রয়েছে।
পাথর সরিয়ে নেওয়ার একাধিক ছবি ও ভিডিও প্রকাশ হয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে ধারণ করা প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ সড়ক দিয়ে পাথরবোঝাই শত শত ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে।
কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, ধোপাখোলা বাজার-কোম্পানীগঞ্জ সড়কের দুপাশে প্রায় ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ক্রাসার (পাথর চূর্ণকারী যন্ত্র) স্থাপন করা হয়েছে। এসব ক্রাসারে দিনভর ভোলাগঞ্জ থেকে আনা পাথর গুঁড়ো করা হয়। এ ছাড়া স্থানীয় স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের মেঘালয় থেকে আমদানি করা পাথরও এখানে জড়ো করে চূর্ণ করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আমদানিকৃত পাথরের সঙ্গে ভোলাগঞ্জ থেকে লুট করে আনা সাদা পাথর মিশিয়ে দেওয়া হয়। পরে আমদানির চালানে ট্রাকে করে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি উজায়ের আল মাহমুদ আদনান বলেন, “সাদা পাথর লুটের ঘটনায় আমরা ১৭টি মামলা দায়ের করেছি। এতে ১৯১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত আরও ৩১০ জন। এর মধ্যে ৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শতাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে। গত চারদিন ধরে অভিযান চলমান।”
মূলহোতাদের বিষয়ে তিনি বলেন, “ঘটনাস্থলে জড়িত অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফয়জুলসহ মূলহোতাদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে।”
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) সিলেটের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাহ সাহেদা আখতার বলেন, “প্রশাসনকে সাদা পাথর রক্ষায় ব্যর্থ বলব না, কারণ তারা চেষ্টাই করেনি। প্রশাসনের উদাসীনতাই এর জন্য দায়ী। এক বছর আগেও কেউ হাত দেওয়ার সাহস পায়নি।”
সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, “সাদা পাথর রক্ষায় নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। কিন্তু লুট বন্ধ হচ্ছে না।”
পূর্বে রক্ষা করতে পারলেও এখন না পারার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি।”
Comments