ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আগুন আতঙ্কে সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ে আগুনের আতঙ্কে সিঁড়ি দিয়ে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ১১ জনকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যার মধ্যে একজনকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে বিদ্যালয়ের পশ্চিম ভবনের তৃতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তৃতীয় তলার বারান্দায় শিক্ষার্থীরা একটি প্রকল্প তৈরি করছিল। এ সময় মাল্টিপ্লাগের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার সময় বিকট শব্দ হলে শিক্ষার্থীরা আগুন লেগেছে মনে করে আতঙ্কিত হয়ে সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে নামতে শুরু করেন। এই হুড়োহুড়িতে প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী ধাক্কাধাক্কি করে আহত হন।
আহতদের মধ্যে আমেনা জাহান আরিশা (৮ম), সোহামণি ইতি (৬ষ্ঠ), তাসনোভা ইসরাত (৭ম), মাকিয়া আক্তার লামিয়া (৮ম), ফারিয়া সুলতানা (৮ম), তানজিনা আক্তার (৭ম), নোহা ইসলাম (৮ম), কলি (৮ম), আরিফা (৮ম), রুহান (৭ম) এবং ফাতেমা আক্তার মীম (৭ম) উল্লেখযোগ্য। রুহানের শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।
আহত শিক্ষার্থী সোহামণি ইতি ও ফাতেমা আক্তার মীম জানান, “আগুন লেগেছে শুনে আমরা আতঙ্কে সিঁড়ি দিয়ে দৌড়াতে গিয়ে ধাক্কা খেয়ে পড়ে আহত হয়েছি।”
বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক কেশব দেবনাথ বলেন, “কিছু হয়নি বলার পরও শিক্ষার্থীরা আমাকে ধাক্কা দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়। পরে নামতে গিয়ে অনেকে আহত হয়।” ইংরেজি শিক্ষিকা মাহমুদা আক্তার জানান, “মাল্টিপ্লাগে শর্ট সার্কিটের শব্দ শুনে শিক্ষার্থীরা ‘আগুন আগুন’ বলে চিৎকার করে দৌড়াতে শুরু করে।”
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সাইমুল হুদা জানান, “আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। একজনের শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তবে আশা করছি, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তারা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারবেন।”
ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিদ্যালয় ও হাসপাতালে সাধারণ মানুষের ভিড় জমে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) তাহমিনা আক্তার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত মো. ইশতিয়াক ভূঞা এবং বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও জেলা বিএনপি নেতা হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি হাসপাতালে ছুটে যান এবং আহত শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহিদুল ইসলাম জানান, “মাল্টিপ্লাগের শর্ট সার্কিটের শব্দে আতঙ্কিত হয়ে শিক্ষার্থীরা সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে আহত হয়েছে।”
Comments