Image description

অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর (ওটিএ) প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড রোধে কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)। একই সঙ্গে লোভনীয় প্যাকেজ ও অতিরিক্ত মূল্য ছাড়ের ফাঁদে পা না দিতে ট্রাভেল এজেন্সি ও সাধারণ যাত্রীদের প্রতি সতর্কতা জারি করেছে সংগঠনটি।

রোববার আটাবের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ফ্লাইট এক্সপার্ট নামক ওটিএ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা অংশীদার ও সিইও সালমান বিন রশিদ শাহ সায়েম গত ২ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে হঠাৎ কার্যক্রম বন্ধ করে অফিস তালাবদ্ধ ও ওয়েবসাইট অকার্যকর করে দেশ ত্যাগ করেছেন। ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭ সাল থেকে ওটিএ হিসেবে কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। তবে অতিরিক্ত কমিশন ছাড় ও অসুস্থ প্রতিযোগিতার কারণে তারা বাজারে এয়ার টিকিটের দাম নিয়ে সিন্ডিকেট তৈরি করেছিল। 

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ফ্লাইট এক্সপার্টের ওয়ান ওয়ে ব্যাংক গ্যারান্টি ছিল প্রায় ৫০ কোটি টাকা। এছাড়া তারা অন্যান্য বড় এজেন্সি থেকে টিকিট সংগ্রহ করে পুনরায় বিক্রি করতো, যার আর্থিক পরিমাণ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।

আটাব জানায়, বর্তমান কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ওটিএ’র প্রতারণা ও টিকিট সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কাজ করে আসছে। এ লক্ষ্যে তারা বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের কাছে ওটিএ পরিচালনার জন্য নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়ে আসছে। গত ২৭ জুলাই, ২০২৩ ও ১০ জুলাই, ২০২৪ তারিখে আটাব সাধারণ যাত্রী ও ট্রাভেল এজেন্সিগুলোকে প্রতারণামূলক অফার থেকে সতর্ক থাকার বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, যা জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ছাপা হয়। এছাড়া, গত ১৯ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখে ওটিএ নীতিমালা প্রণয়নের জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণে সংবাদ সম্মেলন করে আটাব।

আটাব আরও জানায়, ফ্লাইট এক্সপার্টের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো পোর্টাল আইডি শেয়ার ও অতিরিক্ত কমিশনের প্রলোভন দেখিয়ে বাজার দখল করে। বিক্রয় ও ডিপোজিটের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে তারা গ্রাহক ও এজেন্টদের টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এর আগেও “হালট্রিপ”, “২৪টিকেট ডট কম” ও “লেটস ফ্লাই” নামের ওটিএগুলো একইভাবে প্রতারণা করে উধাও হয়েছে।

এদিকে, ফ্লাইট এক্সপার্টের প্রতারণার ঘটনায় গত ৩ আগস্ট আটাবের প্রধান কার্যালয়ে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ফ্লাইট এক্সপার্টকে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান, সদস্যপদ বাতিল, ইস্যুকৃত টিকিটের রিফান্ড স্থগিতকরণ এবং অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট বন্ধে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও ব্যাংকের প্রতি অনুরোধ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া, ভুক্তভোগীদের প্রশাসনিক ও আইনি সহায়তা দিতে আটাব প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আটাবের সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ, অর্থ সচিব শফিক উল্লাহ নান্টু, উপ-মহাসচিব তোহা চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব আতিকুর রহমান, নির্বাহী সদস্য দিদারুল হক, সিনিয়র সদস্য ও সাবেক মহাসচিব জিন্নুর আহমেদ চৌধুরী দীপু প্রমুখ।

আটাব সরকারের প্রতি ওটিএ’র প্রতারণা রোধে দ্রুত নীতিমালা প্রণয়ন ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে, যাতে দেশের পর্যটন ও এভিয়েশন শিল্পের স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত হয়।