Image description

ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কলেজশিক্ষার্থী মাহবুবুল হাসান মাসুম (২৫) হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২২১ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে ফেনী সদর আমলি আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ফেনীর পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান এসব তথ্য জানান।

অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী এবং ফেনী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী। 

পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান জানান, এই মামলায় ১৫৬ জন এজাহারনামীয় এবং ৬৫ জন অজ্ঞাতনামা আসামিসহ মোট ২২১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫১ জন আসামিকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গেল বছরের ৪ আগস্ট মহিপালে মাসুম হত্যাকাণ্ডে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীকে সরাসরি নির্দেশদাতা হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। পুলিশ সুপার জোর দিয়ে বলেন, "মূলত পুলিশের বিভিন্ন তদন্তে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে তারাই চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এখানে কে কোন রাজনৈতিক দলের, তা বিবেচনা করা হয়নি।"

মহিপালে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনায় মোট ২২টি মামলা হয়েছে উল্লেখ করে পুলিশ সুপার জানান, এর মধ্যে ৭টি হত্যা এবং ১৫টি হত্যাচেষ্টা মামলা। এসব মামলায় ২ হাজার ১৯৯ জন এজাহারনামীয় এবং আরও ৪ হাজার অজ্ঞাত আসামি রয়েছে। এখন পর্যন্ত এক হাজারের বেশি আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ১১ জন আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৪ আগস্ট মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা দাবির অসহযোগ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন কলেজছাত্র মাহবুবুল হাসান মাসুম। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭ আগস্ট তিনি মারা যান। নিহত মাসুম সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের তরাব পাটোয়ারী বাড়ির মৃত মাওলানা নোমান হাসানের ছেলে। তিনি ছাগলনাইয়া আব্দুল হক চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ থেকে বাংলায় স্নাতক সম্পন্ন করেছিলেন।

এ ঘটনায় ওই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর নিহত মাসুমের ভাই মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান বাদী হয়ে ১৬২ জনের নাম উল্লেখ এবং আরও ৪০০-৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ফেনী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।