ময়মনসিংহে ৩ ঘন্টাব্যাপী মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ-বিক্ষোভ, পথচারীদের ভোগান্তি

ময়মনসিংহ নগরীতে টানা ৩ ঘন্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করছে ঐতিহাসিক বড় মসজিদ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় নগরীর পথচারিদের মধ্যে চরম ভোগান্তি ও দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত নগরীর পাটগুদাম থেকে কাচারি সড়কে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে আকস্মিক এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে।
এতে সড়কের দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পথচারিদের মধ্যে ব্যাপক ভোগান্তি ও দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্র জানায়, শিশু বলৎকার ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে বিগত কিছুদিন আগে মাদ্রাসা থেকে বহিস্কার হন বোররচরের হুজুর মাওলানা আজিজুল হক। কিন্তু মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি পদে বর্তমান দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো: মুফিদুল আলম অভিযোগ তদন্তপূর্বক মাওলানা আজিজুল হকের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করেন। একই সঙ্গে মুফতি মোফাজ্জল হককে শিক্ষক পদ থেকে বহিস্কার করেন এবং মুফতি সারোয়ার হোসেনকে মাদ্রাসার উপধাক্ষ পদ থেকে অপসারণ ও পরিচালনা কমিটি থেকেও সরিয়ে দেন। এ খবরে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আজ সকাল থেকে মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ করে ডিসির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায়। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এবিষয়ে সাঁড়া না দেওয়ায় সকাল ১০টায় শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসা সংলগ্ন পাটগুদাম টু কাচারি সড়কে অবস্থান নিয়ে ডিসির বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়।
আন্দোলনকারি মাদ্রাসা শিক্ষার্থী তাওহীদুল ইসলাম ও নাজমুস সাকিব মানবকন্ঠকে জানান, একটি মহল বহিস্কৃত শিক্ষক আজিজুল হকের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আমাদের বড় হুজুরের ( আব্দুল হক) বিপক্ষে পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ তুলে ডিসির কাছে মূল ঘটনা পাশ কাটিয়ে যায়। এতে ডিসি প্রভাবতি হয়ে শিশু নির্যাতনকারি বহিস্কৃত শিক্ষকের পক্ষ নিয়ে মুফতি মোফাজ্জল হককে অন্যায়ভাবে বহিস্কার করেছে। একই সঙ্গে আমাদের উপাধাক্ষ মুফতি সারোয়ার হোসেনকে পদ এবং মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটি থেকেও ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপসারণ করেছে। এছাড়াও ডিসি আমাদের হুজুরদের শাসিয়ে অপমান অপদস্থ করেছেন। অবিলম্বে ডিসি তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মাদরাসার বড় হুজুর মাওলানা আব্দুল হক নীতিমালা উপেক্ষা করে প্রতিষ্ঠানে আধিপত্য ধরে রাখতে পরিবারতন্ত্র কায়েম করেছেন। মূলত এ কারণেই বেশ কয়েক দফা পরিচালনা কমিটির সঙ্গে মাওলানা আব্দুল হকের বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।
তবে ঘটনার বিষয়ে জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো: মুফিদুল আলম এবং মাওলানা আব্দুল হকের বক্তব্য জানা যায়নি।
এদিকে সড়ক অবরোধের সত্যতা নিশ্চিত করে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: শিবিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আশা করছি খুব দ্রুত সৃষ্ট সমস্যার সামাধান হবে।
Comments